বেলা ১২টা। টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে যেতেই চোখে পড়ল ভোটার শূন্য মাঠ। কেন্দ্রের ভেতর গিয়ে দেখা গেল নারী ভোটারদের কক্ষে সাত থেকে আটজন যুবক। তারা প্রকাশ্যে সিল মারছেন। একজন বাইরে থেকে চিৎকার করে বললেন, ‘ওই সাংবাদিক আইছে, বাইরে চইলা আয়।’ যুবকেরা দ্রুত বের হয়ে গেলেন। তারা পাশেই পুরুষ ভোটারদের কক্ষের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে গেলেন। আশপাশ থেকে আরও কয়েকজনকে ডেকে দাঁড় করিয়ে লাইন লম্বা করলেন।
শুধু এলেঙ্গা হাইস্কুল কেন্দ্র নয়, এই আসনের এলেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পোষনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা, কুড়িঘড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে একই চিত্র পাওয়া যায়।
এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ইস্কান্দার মির্জা জানান, তার কেন্দ্রে মোটর ভোটার তিন হাজার ৮৬৯জন। দুপুর ১২টার মধ্যে দুই হাজারের বেশি ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।
দুপুর দেড়টার দিকে টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের গোপালপুর উপজেলার জগতপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সামনেই আওয়ামী লীগ কর্মীদের সিল মারতে দেখা যায়।
ঐক্যজোট ও বিএনপি প্রার্থীদের অভিযোগ, টাঙ্গাইলের বিভিন্ন আসনে ভোটের আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে রাখা হয়েছিল। এ জন্য ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও ভোট গ্রহণের হার বেশি ছিল। দুপুরের পর এসব কারণে জেলার পাঁচজন বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানান। এরা হচ্ছেন, টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনের সরকার শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের প্রার্থী কারাবন্দী সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পক্ষে তার ভাই জেলা বিএনপির সভাপতি শামছুল আলম, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে লিয়াকত আলী, টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে গৌতম চক্রবর্তী।
এদিকে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিউল্লাহ আল মুনির ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকী নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ করেছেন।
তবে জেলার আটটি আসনের কোথাও গোলযোগের ঘটনা ঘটেনি। সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের টহল ছিল পুরো জেলা জুড়ে।