খাদ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় হুইপ

'আপনি কৃষকের সঙ্গে মসকরা করতে পারেন না'

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে ধানের দাম কম পাওয়ায় নিজের জমিতে কৃষকের আগুন দেওয়ার ঘটনাকে পরিকল্পিত মনে করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এদিকে খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ।

খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, ঘটনাটি এমনই পরিকল্পিত যে সকাল থেকে সেখানে সাংবাদিকেরা গিয়ে বসে ছিলেন। ধানের দাম কম, এ জন্য একজন কৃষক হিসেবে সেই দুঃখ আমারও আছে। কিন্তু তাই বলে কৃষক তাঁর উৎপাদিত ধানে আগুন দেবেন, এটা হতে পারে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গতকাল বুধবার সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা খাদ্যগুদামে প্রান্তিক কৃষক এবং মিলারদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান ও চাল ক্রয় উদ্বোধন শেষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করেন জাতীয় সংসদের হুইপ। আবু সাঈদ আল মাহমুদ গতকাল দুপুরে তাঁর ফেসবুক পেজে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, ‘আপনি কৃষকের সঙ্গে মশকরা করতে পারেন না। আপনি, আমি কৃষকের ভোটে, কৃষকের দয়ায় সংসদে এসেছি। কৃষককে ধানের মূল্য দিতে পারবেন না, বিনয়ের সঙ্গে সম্মানিত কৃষকদের সীমাবদ্ধতার কথা অবহিত করুন। সমস্যা কোথায়? অসীম সমস্যার এই দেশে সবকিছু রাতারাতি ঠিক হবে না, এ কথা বিনয়ের সঙ্গে বললে মানুষ গ্রহণ করবে।’

হুইপের এ বক্তব্যের পর তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। গতকাল রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বক্তব্যটি ৭৫৪ জন শেয়ার করছেন, মন্তব্য পড়েছে ৪৬৪টি।

হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, ‘একজন অসহায় কৃষকের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকেও সহ্য করতে পারবেন না? আপনি তো সামরিক স্বৈরাচারের মন্ত্রী নন। আপনাকে স্মরণ রাখতে হবে, আপনি আমলা বা ব্যবসায়ী কোটার মন্ত্রী নন। তৃণমূল থেকে কাদামাটি গায়ে মাখা রাজনীতিবিদ। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান থেকে ধাপে ধাপে ধান আবাদি মানুষের সহযোগিতা–সমর্থনে আজকের পর্যায়ে এসেছেন। অন্তত আপনি কৃষকের সঙ্গে মশকরা করতে পারেন না।’

গতকাল সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, বগুড়া সদর ও আদমদীঘির সান্তাহারে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন হয় বলে প্রথম আলোর সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগুনের ফুলকির মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করছি। চালের দাম বাড়লেও গণমাধ্যমে নেতিবাচক খবর আসে, আবার ধানের দাম কমলেও নেতিবাচক খবর আসে। ২০০ টাকায় বার্গার কিনে খেলে কিছু যায় আসে না, কিন্তু চালের দাম দুই টাকা বাড়লে চিল্লাচিল্লি হয়।’