‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র’—কে না শেখায় আমাদের। ভোরের প্রথম আলো আমাদের শিখিয়ে দিয়ে যায়, রাত্রির ঘোর অমানিশার পরেই যেমন আসে দিন, তেমনি দুখের পরে সুখ। রোদ ঝলমলে দিনে মুহূর্ত মাঝে যখন আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়, শুরু হয় কালবৈশাখীর তাণ্ডব, সে আমাদের মনে করিয়ে দেয় জীবন অনিশ্চয়তায় ভরপুর।
মনীষীদের জীবনী থেকেও আমরা আজীবন শিখি। তাই শুধু চাই শেখার মতো মন, হৃদয়বৃত্তি, বুদ্ধিবৃত্তি। শিক্ষক দিবসে (৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবস) তাই জানা, অজানা সমস্ত শিক্ষিক-শিক্ষিকাকে জানাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা। একজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক কেমন হবে? অবশ্যই তা হওয়া উচিত বন্ধুর মতো, কিন্তু সেখানে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। ছাত্রের আত্মসম্মানবোধ থাকতে হবে, আবার এমন আত্মসম্মানবোধও না যে শিক্ষক বকা দিলে মন খারাপ করে থাকতে হবে।
প্রত্যেক শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের বাইরে কিংবা একাডেমিক কাজ ছাড়াও কথা বলার সময় দেওয়া উচিত। শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীদের সময় দেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় আরও ভালো হয়ে উঠবে। একজন আদর্শ শিক্ষক শুধু উত্তর সাধকই নন, তিনি শিষ্যের জন্য অনুপ্রেরণাও। অনেক সময় নতুন পরিবেশ অথবা নতুন ধরনের কাজের ক্ষেত্রে ছাত্ররা ভয়ে থাকে, উদ্বিগ্ন থাকে। শিক্ষকদের উচিত সে সময়টায় এগিয়ে আসা। তাদের ছাত্রদের আপন করে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ভয় পেলে ছাত্রদের শিক্ষার মানসিকতা নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ভিত্তি হলো পারস্পরিক কথোপকথন। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকের ইতিবাচক ব্যবহার পারস্পরিক সম্পর্কের ভিতকে মজবুত করতে সাহায্য করে। এ সম্পর্কের শুরু একজন শিক্ষকই করতে পারেন তাঁর ছাত্রদের প্রতিভা, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ, বিষয়ে আলাপ-আলোচনা দিয়ে। একজন শিক্ষক যখন ছাত্রদের উৎসাহ ও প্রেরণা দেন, তখন ছাত্ররাও তাদের জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে সংকল্প বদ্ধ হয়। তাই যতটা সম্ভব ইতিবাচক মনোভাব এবং যথার্থ ভাষা ব্যবহার করা একজন শিক্ষকের কাছে প্রত্যাশিত।
*নাফিসা আবেদীন কথা: চিকিৎসক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা