রাষ্ট্রমালিকানাধীন আট ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে জরুরি সভা করে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগের দায়িত্বে থাকা ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি, ১৪টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা এ সিদ্ধান্ত নেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডাকা ওই সভায় পরীক্ষা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
তিনটি সিদ্ধান্ত দিয়ে সভা শেষ হয়। প্রথমত, পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটি দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। তৃতীয়ত, এরপর সিদ্ধান্ত হবে পরবর্তী সময়ে কী প্রক্রিয়ায় এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
সরকারি ব্যাংকগুলোর নিয়োগপ্রক্রিয়ায় বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি গঠন করে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে প্রধান করে সরকারি সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডিদের এতে সদস্য করা হয়। এরপরও নিয়োগ পরীক্ষার অব্যবস্থাপনা ও প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। প্রশ্ন ফাঁসের কারণে ইতিমধ্যে দুটি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল হয়েছে।
গত শুক্রবার রাষ্ট্রায়ত্ত তিন ব্যাংকসহ আট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার (সাধারণ) ১ হাজার ৬৬৩টি শূন্যপদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণযোগ্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ১৩ হাজার। ৬১টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ওই পরীক্ষার অনেক কেন্দ্রেই আসন-ব্যবস্থাপনা, সময়মতো প্রশ্নপত্র না পাওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন পরীক্ষার্থীরা। মিরপুরের শাহ আলী মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষার সময়ই বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা ভাঙচুর চালান, পরে সেই কেন্দ্রের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
৮ ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া, ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির (বিএসসি) সদস্যসচিবের পদত্যাগ, প্রতিটি কেন্দ্রে আসনবিন্যাস নিশ্চিত করা, বিতর্কিত কেন্দ্র বাদ দেওয়া, বিকল্প কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্ন প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়াসহ ৯ দফা দাবি ছিল আন্দোলনকারী পরীক্ষার্থীদের।