ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই রাজধানীর রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে রক্তে। আজ মঙ্গলবার সকালে মালিবাগে বাসের ধাক্কায় ঝরে গেছে অজ্ঞাতনামা এক নারীর প্রাণ। এর কয়েক ঘণ্টা আগে গতকাল সোমবার রাতে বারিধারায় বেপরোয়া বাস রাস্তা ছেড়ে ফুটপাতে উঠে কেড়ে নিয়েছে আরও দুটি প্রাণ। ঢাকার মতো জয়পুরহাট, গোপালগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জেও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরেছে। সব মিলিয়ে নিহত সাতজন। গতকাল রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
ঢাকা: পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভোরে মালিবাগের মৌচাক এলাকায় বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন অজ্ঞাতনামা এক নারী। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন এক পথচারী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাতটার দিকে ওই নারী মারা যান।
বারিধারায় ভাটারা থানা এলাকায় গতাকল দিবাগত রাত তিনটার দিকে কোকাকোলা বাসস্ট্যান্ডে বাড্ডাগামী দেওয়ান পরিবহনের একটি বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটি ফুটপাতে চায়ের দোকানে উঠে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চা বিক্রেতা শাহিন (৪২) ও নৈশপ্রহরী কবির হোসেন (৪৫) মারা যান। ঘটনাস্থলে বাসটি ফেলে এর চালক ও সহকারী পালিয়ে যান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।
জয়পুরহাট: জয়পুরহাটে ট্রাক্টরের (স্থানীয় নাম মেসি) ধাক্কায় একজন ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পাঁচবিবি উপজেলার প্রধান সড়কের পাঁচমাথা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ভ্যানচালকের নাম আমজাদ হোসেন (৫০)। তিনি পাঁচবিবি উপজেলার দরপাল গ্রামের বাসিন্দা।
পাঁচবিবি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম জানান, আমজাদ হোসেন ভ্যান নিয়ে পাঁচবিবি বাজারে আসছিলেন। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে প্রধান সড়কের পাঁচমাথা নামক স্থানে একটি মেসি ভ্যানটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ভ্যানচালক আমজাদ হোসেন গুরুতর আহত হন। জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
গোপালগঞ্জ: কোটালিপাড়া উপজেলায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাস খাদে পড়ে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আহত ১১ জন। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে উপজেলার খেলনা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজনের একজন হলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানশাহী গ্রামের আবদুল মাজেদের ছেলে নুর ইসলাম (৪০)। তিনি বেসিক ব্যাংকের কোটালিপাড়া শাখার ক্যাশ ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অপরজন হলেন কোটালিপাড়ার পূর্ব পাড়ের শহীদ মোল্লার স্ত্রী মোমেনা বেগম (২৬)।
গোপালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. জানে আলম দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সিরাজগঞ্জ: ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলে ওমর শরিফকে নিয়ে জলিল আকন্দ (৫০) নামের এক ব্যক্তি অটোভ্যানে চড়ে পরীক্ষাকেন্দ্র সলঙ্গা ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। চড়িয়া এলাকায় হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কে একটি ট্রাক তাঁদের ভ্যানকে চাপা দেয়। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জলিল আকন্দকে মৃত ঘোষণা করেন। ছেলে ওমর শরিফকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
সড়ক, যান, চালক কিছুই ঠিক নেই