সাভারে শিক্ষক হত্যা

৬ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর
 ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আজ বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কলেজের সামনের সড়কে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

এদিকে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলছাত্রের বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে অভিযুক্ত স্কুলছাত্র এখনো পলাতক।

মানববন্ধন থেকে শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা ছয়টি দাবির কথা জানিয়েছেন। সেগুলো হলো—মামলার প্রধান আসামি স্কুলছাত্রকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার, অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেপ্তার, প্রধান আসামি স্কুলছাত্রের পরিবারের পলাতক সদস্যদের আইনের আওতায় আনা, নিহত শিক্ষকের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্থানীয় ও বাইরের শিক্ষার্থী হিসেবে ভেদাভেদ দূর করতে আইন প্রণয়ন এবং কিশোর গ্যাং ও কিশোর অপরাধ দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।

মানববন্ধনে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মুন্নি আক্তার বলেন, হত্যাকারী একদিনে গড়ে ওঠে না। হত্যাকারীর পরিবার যদি যথাসময়ে তাকে শাসন করত, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না। শিক্ষককে হত্যার পর তারা (ওই ছাত্রের পরিবার) শিক্ষকের পরিবারের প্রতি কোনো সহমর্মিতা দেখানোর প্রয়োজন মনে করেনি। তারা তো বলতেই পারত, সন্তান অন্যায় করেছে আপনারা শাসন করুন। কিন্তু তারা সেটি না করে উল্টো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হযরত আলী। শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ওই স্কুলছাত্র সম্পর্কে তাঁর ভাতিজার ছেলে। মানববন্ধনে তিনি বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। অপরাধী যে–ই হোক, শাস্তি তাকে পেতেই হবে। ঘটনার পর শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

মানববন্ধনে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যখন চোখের পাতা বন্ধ করি, তখনই উৎপলকে দেখতে পাই। আজ তিনি নেই, কিন্তু প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাঁর দায়িত্বশীলতার নানা ঘটনা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আমাদের সেই উজ্জ্বল নক্ষত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো। এ ঘটনায় এমন শাস্তি কামনা করছি, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহস না পায়।’