প্রতারণার মাধ্যমে ৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে এক দম্পতি গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে। তাঁরা হলেন মুকতারুল হক (৩৭) ও রুবিনা আক্তার সাথী (৩০)। এই দম্পতির বিরুদ্ধে রাজধানীর আদাবর থানায় মামলা করেন মোহাম্মদ হামিমুর রহমান শিকদার নামের এক ব্যক্তি।
মামলায় বাদী হামিমুর রহমান অভিযোগ করেন, আসামি মুকতার আদাবর এলাকায় একটি ওষুধের দোকান পরিচালনা করতেন। সেখানে আসামিদের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। ব্যবসার কথা বলে ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি ওই দম্পতি ৫৫ লাখ টাকা নেন। লাভ পাওয়ার আশায় তিনি আসামিদের এই টাকা দেন। কয়েক মাস লাভের টাকা দিলেও গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে আসামিদের দোকান বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলায় মোহাম্মদ হামিমুর রহমান শিকদার দাবি করেন, দোকান বন্ধ পাওয়ার পর তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আসামিরা আদাবর এলাকার মালেকের কাছ থেকে ৮৯ লাখ টাকা নেন। এ ছাড়া পলি রহমানের কাছ থেকে ১৫ লাখসহ ৬০ জনের কাছ থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা নেন।
মামলা করার পর ১৩ মার্চ আসামি মুকতারুল ও রুবিনাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করে আদাবর থানার পুলিশ। সেদিন আদালতকে পুলিশ প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁরা একেক সময় একেক কথা বলেন। প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। আদালত এই আসামিদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
২০ মার্চ এই দম্পতিকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মতলুবুল আলম। রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনে বলা হয়, ৬০ জন নিরীহ ব্যক্তির কাছ থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রতারণার মাধ্যমে টাকা নেওয়ার কথা কৌশলে এড়িয়ে যান। মামলার আসামি রুবিনা আক্তারের পাসপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আসামি তাঁর পাসপোর্টে জাহানারা বেগম উল্লেখ করেছেন, যা বিভ্রান্তিকর। অথচ জাতীয় পরিচয়পত্রে এই আসামির নাম রুবিনা আক্তার সাথী। প্রতারণার মাধ্যমে নেওয়া এই টাকা কোথায় জমা রেখেছেন, তা জানার জন্য আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
আসামিপক্ষ আদালতে দাবি করে, এ ঘটনার সঙ্গে আসামিরা জড়িত নন। হয়রানি করার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার এসআই মতলুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে ৬০ জনের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুই আসামি এখন কারাগারে আছেন। মামলার তদন্ত চলছে।