বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পার করেছে ৪২ বছর। আর গত ৪২ বছর ধরে সংগঠনটি চলছে মূলত সংঘের সদস্যদের চাঁদায়। অন্যান্য সামান্য কিছু অনুদান পায়।
আজ শনিবার নারী লেখিকাদের পরিচালিত এ সংগঠন ৪২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক মিলনমেলার আয়োজন করে।
সংগঠনটির যেমন বয়স বেড়ে ৫০ ছুঁই ছুঁই করছে, তেমনি সদস্যদেরও বয়স বেড়েছে। এর মধ্যে কালের স্রোতে অনেকে হারিয়েও গেছেন। তাই মিলনমেলায় আনন্দের পাশাপাশি বক্তাদের কণ্ঠ ছিল খানিকটা অশ্রুভেজা। সদস্যদের কেউ কেউ হুইল চেয়ারে করে অনুষ্ঠানে এসেছেন। বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠতে অনেক সদস্যকেই বেশ বেগ পেতে হয়। তবে সবার কণ্ঠে ছিল দৃঢ়তা। সামনে আরও দীর্ঘদিন পথচলার অঙ্গীকার।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বক্তব্যের শুরুতেই লেখিকা সংঘের দীর্ঘ পথচলাকে স্বাগত জানান। সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। নারীদের ক্ষমতায়িত এবং শিক্ষিত করার চেষ্টাকে সাধুবাদ জানান।
সংগঠনটি প্রতিভা সন্ধান করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করছে উল্লেখ করে আরেফিন সিদ্দিক সংগঠনটি যাতে তরুণ প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস চর্চায় সহায়তা করে সে আহ্বানও জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ লেখিকা সংঘের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দিলারা মেসবাহ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, শিক্ষাবিদ নিয়াজ জামান এবং কথা সাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
৪২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংঘের পক্ষ থেকে সাহিত্য পদক এবং গুণীজন সংবর্ধনার আয়োজন করে লেখিকা সংঘ। সংঘের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রাক্তন সভাপতি মরহুম নয়ন রহমানকে এবার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়। তাঁর পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কবি তাইবুন নাহার রশীদ স্বর্ণপদক দেওয়া হয় কবি জাহানারা আরজুকে। এ ছাড়া সাহিত্য পদক পেয়েছেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, জামিল আখতার এবং সুফিয়া রহমান। অনুষ্ঠানের অতিথিরা পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে লেখিকা সংঘ প্রকাশিত ভ্রমণ কাহিনি ‘পথ আমারি সাথি’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ১৯৭৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ লেখিকা সংঘের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ঢাকার বাইরেও রয়েছে এ সংগঠনের অঙ্গ সংগঠন। সংঘ প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের বই প্রকাশের পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছে অন্যান্য কার্যক্রম।