উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স

৪০৬টি ভবন পড়ে আছে

১ হাজার ২২৪ কোটি টাকায় ৪৭০টি কমপ্লেক্স করা হচ্ছে। এর মধ্যে নির্মিত হয়েছে ৪০৬টি ভবন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে হস্তান্তর করা যাচ্ছে না।

টেকনাফ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। সম্প্রতি তোলা
ছবি: গিয়াস উদ্দিন

তিনতলা ভবনটি বাইরে থেকে দেখতে বেশ সুন্দর। কিন্তু ভেতরে উল্টো চিত্র। প্রতিটি তলায় ধুলাবালুর আস্তরণ। কোথাও বৃষ্টির পানি জমে আছে। দরজা ভাঙা। আসবাব, শৌচাগার, টাইলস দেখে বোঝার উপায় নেই দুই বছর আগে ভবনটি উদ্বোধন করা হয়েছে। ভবনের সামনের নলকূপটি নষ্ট।

এটি মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের চিত্র। ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তুলে ধরে সকলকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে’ তিনতলা কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করেছে সরকার। প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ভবনটি উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন।

কিন্তু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় এবং সেখানে কোনো কমিটি না থাকায় ভবনটি মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে হস্তান্তর করা যায়নি। ফলে তালাবদ্ধ ভবনটি অনেকটা পরিত্যক্ত স্থাপনার মতো পড়ে রয়েছে। সম্প্রতি ঘটনাস্থলে গেলে এই প্রতিবেদকের অনুরোধে তালা খুলে দেন ভবনটির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোবারক আলী। তাঁর ভাষ্য, ‘আমাদের এখানে কমিটি নেই। তাই সরকার ভবনটি বুঝিয়ে দিতে পারছে না।’ কেবল টঙ্গিবাড়ী উপজেলা নয়, দেশের কোথাও এখন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমিটি নেই। ফলে এখন পর্যন্ত নির্মিত ৪০৬টি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে হস্তান্তর করা যাচ্ছে না। ফলে ভবনগুলো ঠিকভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কোনো কোনো স্থানে সন্ধ্যার পর মাদকসেবীদের আড্ডাও জমে বলে খবর পাওয়া গেছে।

তিনি এই উপজেলায় নতুন এসেছেন। ভবনটি চালুর বিষয়ে আগে কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। তাঁরা দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।
রুমানা তানজিন, টঙ্গিবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)
মুন্সিগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স।

অথচ ভবনগুলো বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পদচারণে মুখর হওয়ার কথা ছিল। এসব ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা দোকান করে ভাড়া দেওয়ার জন্য এবং তৃতীয় তলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অফিস ও সম্মেলনকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করার কথা। গত ২২ মে টঙ্গিবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ছয়টি করে মোট ১২টি দোকান নির্মাণ করা হলেও ভাড়া দেওয়া হয়নি। তৃতীয় তলায় অফিসকক্ষে টেলিভিশন আছে, তা দেখার মানুষ নেই। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও ডেপুটি কমান্ডারের জন্য তৈরি করা কক্ষ দুটি বন্ধ।

টঙ্গিবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা তানজিন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এই উপজেলায় নতুন এসেছেন। ভবনটি চালুর বিষয়ে আগে কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। তাঁরা দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যক্রমে গতি আনতে ২০১২ সালে দেশের ৪৭০টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এ জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকা।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়, ভবনে দোকান ভাড়ার আয় থেকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দৈনন্দিন ব্যয় মেটানো হবে। ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা হবে। প্রতিটি ভবন আড়াই হাজার বর্গফুটের। ২০১৬ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। দুই দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এলজিইডি থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য বলছে, এ পর্যন্ত ৪০৬টি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। প্রতিটি ভবন নির্মাণে গড়ে খরচ হয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

নির্মাণকাজ শেষে ভবনটি এলজিইডিকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
শাহাদাৎ হোসেন, স্বত্বাধিকারী নারায়ণগঞ্জ শহর যুবলীগের সভাপতি
নারায়ণগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স।

এই প্রকল্পের পরিচালক আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের কমিটি না থাকায় আমরা তাঁদের ভবন হস্তান্তর করতে পারছি না। এ ভবনের দায়িত্বে আছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি। তারাই ভবনের নজরদারি করবে। আমরা তাদের কাছে হস্তান্তর করছি।’

যে উদ্দেশ্যে এসব ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, সেটার সুফল বীর মুক্তিযোদ্ধারা কতটা পাচ্ছেন, সেটা সরেজমিনে দেখতে এই প্রতিবেদক সম্প্রতি টঙ্গিবাড়ী, লৌহজং ও সিরাজদিখান উপজেলায় যান। একই সঙ্গে দেশের আরও চার জেলায় সরেজমিনে ভবনগুলো দেখতে যান প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা।

কী দেখা গেল

দুই থেকে তিন বছর আগে নির্মিত এসব ভবনের বেশির ভাগই তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। কোথাও দু-একজন মুক্তিযোদ্ধাকে দেখা গেছে। তবে বয়োজ্যেষ্ঠ হওয়ার কারণে তাঁরা তৃতীয় তলায় উঠতে পারেন না। কোথাও কোথাও দোকানের পরিবর্তে হাসপাতাল ও জীবনবিমা কোম্পানিকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তারা দোকানের কাঠামোই পরিবর্তন করে ফেলেছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৯ সালে জারি করা পরিপত্রে ‘দোকান’ ভাড়া দিতে বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানদের অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তা মানা হয়নি।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে দেড় বছর আগে। এটি নির্মাণ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস আর এন্টারপ্রাইজ। এর স্বত্বাধিকারী নারায়ণগঞ্জ শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নির্মাণকাজ শেষে ভবনটি এলজিইডিকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। বন্দর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে। রাতের বেলায় সেখানে মাদকসেবী ও বখাটেরা আড্ডা জমায়।

মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি। ভবনের ১২টি দোকান ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন।
মো. ইমরান হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

কক্সবাজারের টেকনাফ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের একটা অংশ ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ভবনে মুক্তিযোদ্ধারা আসেন না। রাতের বেলায় ছাদে মাদক সেবনের আসর জমে বলে জানিয়েছেন একাধিক মুক্তিযোদ্ধা। এই প্রতিবেদক নিজেও ছাদে মাদক সেবনের কিছু আলামত দেখতে পান।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় দুই বছর আগে ভবনটি নির্মিত হয়। এরপর থেকে তালাবদ্ধ আছে। এখানকার চারজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্ষেপ করে বলেন, তাঁরা জীবিত অবস্থায় ভবনটি ব্যবহার করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মাহাবুবুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন নেই। তাই সংসদ পরিচালনার কোনো কমিটি নেই। এ জন্য কেউ ভবনটির দায়িত্ব নিতে চান না। তাই এটি বন্ধ রয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি। ভবনের ১২টি দোকান ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন।

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ১২টি দোকানের মধ্যে মাত্র দুটি দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো বন্ধ। ভবনের আশপাশে বড় বড় ঘাস জন্মেছে।

সিরাজদিখান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নিচতলা ও দোতলা নিউ লাইফ জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম জানান, তাঁরা দুটি তলা ভাড়া নিয়েছেন ২০১৯ সালে। ইউএনও কার্যালয়কে ভাড়া দেন।

‘এসব ভবনের অব্যবস্থাপনা নিয়ে আমার কাছেও খবর এসেছে। ভবনগুলো ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নির্বাচনের বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। আমিও চাই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনটা হোক; উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের দায়িত্ব মুক্তিযোদ্ধাদের হাতেই থাকুক।’
আ ক ম মোজাম্মেল হক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

ইসলামপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নিচতলায় দোকানের স্থলে উপজেলা সমবায় ও পরিসংখ্যান কার্যালয়কে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। বাকি ঘরগুলো বিভিন্ন সময় টিসিবির পণ্যের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের আনাগোনা নেই। কোনো কর্মচারী নেই। ভবনের মেঝে স্যাঁতসেঁতে।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব নিজ এলাকা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ওই ভবনও মুক্তিযোদ্ধাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। সেটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। সবকিছু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে একদিকে সরকারের অর্থের অপচয় হচ্ছে, একই সঙ্গে একটি ভালো উদ্যোগ বিফলে যাচ্ছে।

কেন এই জটিলতা

প্রথম আলোর অনুসন্ধান বলছে, ভবনগুলো অযত্নে পড়ে থাকার মূল কারণ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়া। নিয়ম অনুযায়ী, কমপ্লেক্স ভবন পরিচালিত হবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উপজেলা কমান্ডের মাধ্যমে। কিন্তু কেন্দ্রীয়, জেলা, মহানগর ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৪ সালে। তিন বছর পরপর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও গত আট বছরে কোনো নির্বাচন হয়নি। ফলে ভবনগুলো উপজেলা কমান্ডের কাছে বুঝিয়ে দিতে পারছে না এলজিইডি।

এই অবস্থায় এসব ভবন পরিচালনার জন্য ২০১৯ সালে ইউএনওকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সে কমিটিকে এলজিইডি ভবনগুলো বুঝিয়ে দিয়েছে।

লৌহজং উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মহিউদ্দিন বাবুল মুনসী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা কারও অধীনে থাকবেন, এটা দুঃখজনক।’ তিনি বলেন, তাঁদের কমিটি না থাকায় দাপ্তরিক কাজ করতে পারছেন না। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যয়নপত্র, গেজেটের তথ্য, মুক্তিযোদ্ধা নম্বর, ব্যাংকঋণসহ কোনো কাজেই সহযোগিতা করতে পারছেন না।

বিভিন্ন এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, অনেক এলাকায় এসব কমপ্লেক্স নির্মাণের স্থান নির্বাচনে গলদ রয়েছে। এমন জায়গায় ভবন করা হয়েছে, যেখানে মানুষের যাতায়াত কম। ফলে দোকান ভাড়া নেওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে না কেউ।

এই বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে ভবন নির্মাণ করে বুঝিয়ে দেওয়া। এরপর সেখানে কী হচ্ছে, তা দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়। জমি না পাওয়ার কারণেই ভবনগুলো উপযুক্ত স্থানে নির্মাণ করা যায়নি।’

আইএমইডির প্রতিবেদনও হতাশার

উন্নয়ন প্রকল্পে নজরদারি করা সরকারের একমাত্র সংস্থা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনেও একই চিত্র উঠে এসেছে। কক্সবাজারের উখিয়া, মহেশখালী, নাটোর, নওগাঁ, রাজশাহীসহ অন্তত ১০টি কমপ্লেক্স ভবন পরিদর্শন শেষে আইএমইডি জানিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভবনগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

আসবাব অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ভবনের বাইরে ও ভেতরে দেয়াল দিন দিন খারাপ হচ্ছে। অনেক জায়গায় ফাইল ক্যাবিনেট, আলমারি ভেঙে গেছে। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সক্রিয় না থাকায় নির্মিত ভবন যথাযথভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। ভবনগুলো রক্ষণাবেক্ষণে করণীয় ঠিক করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে আইএমইডি।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব ভবনের অব্যবস্থাপনা নিয়ে আমার কাছেও খবর এসেছে। ভবনগুলো ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নির্বাচনের বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। আমিও চাই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনটা হোক; উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের দায়িত্ব মুক্তিযোদ্ধাদের হাতেই থাকুক।’

[তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ, জামালপুর, টেকনাফলক্ষ্মীপুর]