দেশে দূরপাল্লার বাস-মিনিবাসের ভাড়া গড়ে ২৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভাড়া নির্ধারণী কমিটি। একইভাবে মহানগর এলাকার বাসভাড়া ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকা থেকে ১০ টাকা এবং মিনিবাসের সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা থেকে ৮ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আজ রোববার বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বসেন সরকারের কর্মকর্তারা। সেখানে ভাড়া বাড়ানো নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে এসব বিষয়ে মতৈক্য হয়।
প্রস্তাব অনুযায়ী, দূরপাল্লার বাস-মিনিবাসে কিলোমিটারে ১ টাকা ৮০ পয়সা ভাড়া আদায় করা হবে। বর্তমানে ভাড়া ১ টাকা ৪২ পয়সা। মহানগর এলাকায় বাসে যাত্রীপ্রতি কিলোমিটারে আদায় করা হবে ২ টাকা ১৫ পয়সা। আর মিনিবাসে আদায় করা হবে ২ টাকা ৫ পয়সা। বর্তমানে বড় বাসে ১ টাকা ৭০ পয়সা এবং মিনিবাসে নেওয়া হয় ১ টাকা ৬০ পয়সা।
সিএনজিচালিত বাসের ক্ষেত্রে এই ভাড়া প্রযোজ্য হবে না। এই ভাড়া শুধু ডিজেলচালিত বাসের জন্য।
বৈঠক শেষে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার জানান, আজই ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। নতুন ভাড়া কাল থেকেই কার্যকর হবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ সারা দেশে বাস ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করলাম।’
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত বুধবার রাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। এরপর ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে গত শুক্রবার অঘোষিতভাবে বাস, ট্রাক ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন মালিকেরা।
এখন ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পর বাসমালিকেরা যাত্রী পরিবহনের ঘোষণা দিলেন। তবে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাক–কাভার্ড ভ্যানের মালিকেরা।
পণ্য পরিবহনের যানবাহনের ভাড়া সরকার ঠিক করে দেয় না। ফলে বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ের ওই বৈঠকে ট্রাক–কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির নেতারা ছিলেন না।
ওই বৈঠক চলার মধ্যে বিকেলে এ খাতসংশ্লিষ্ট মালিক সংগঠনগুলো জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
রাজধানীর তেজগাঁওকেন্দ্রিক পণ্য পরিবহনে যুক্ত মালিকদের দুটি সংগঠন আছে। এর একটি বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক সমিতি। আজ বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে তারা।
অপর সংগঠন বাংলাদেশ ট্রাক–কাভার্ড ভ্যান, ট্যাংক লরি ও প্রাইম মুভার মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁরাও ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।