২০২৩ সালের মধ্যে দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ও ব্যবহার শুরু হবে। দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটির ধরন নির্ধারণে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর বাংলামোটরে বিএসসিএল কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ।
দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২’-এর ধরন নির্ধারণের জন্য ফ্রান্সের প্রাইসওয়াটারহাউসকুপার্সকে (পিডব্লিউসি) নিয়োগ দিয়েছে বিএসসিএল। আজ মঙ্গলবার ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি অনুষ্ঠান শেষে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলারের (১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা) চুক্তি হয়েছে। এরপরের সর্বনিম্ন দরদাতা ছিল ৫ লাখ ডলারের ওপর। কোন স্যাটেলাইটটি বাংলাদেশের জন্য উপযোগী, তা ঠিক করতে পিডব্লিউসি পর্যালোচনা করে তিন মাসের মধ্যে বিএসসিএলকে পরামর্শ দেবে।
বিএসসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের পরামর্শক নিয়োগ করতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। ২১টি আবেদন জমা পড়ে। সেখান থেকে ৭টি প্রতিষ্ঠানকে দরদাম জমা দিতে বলা হয়। চারটি প্রতিষ্ঠান দরদাম জমা দেয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউসকুপার্সকে (পিডব্লিউসি) পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
২০১৮ সালের ১২ মে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইটের অভিজাত ক্লাবে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। এতে বাংলাদেশের খরচ হয় ২ হাজার ৯০২ কোটি টাকা।
সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বিএসসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরীয়ার আহমেদ চৌধুরী ও পিডব্লিউসি স্পেস প্র্যাকটিস লিডার লুইগি স্ক্যারিয়া। চুক্তিটি অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পিডব্লিউসির বাংলাদেশের সহযোগী পরিচালক সুপর্ণা রায়।
২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর বিএসসিএল চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ জানিয়েছিলেন, তিন থেকে চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নির্ধারণে পরামর্শ নিয়োগ দেওয়া হবে। সেই পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হলো আজ মঙ্গলবার। এ প্রসঙ্গে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, পরামর্শক নিয়োগ আরও আগেই দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে তা পিছিয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ কী ধরনের স্যাটেলাইট হবে, জানতে চাইলে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, দ্বিতীয়টি হাইব্রিড স্যাটেলাইট হতে পারে। এই স্যাটেলাইটটি আবহাওয়া, নজরদারি বা নিরাপত্তাসংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত হবে। তবে এখনো যেহেতু ধরনটি ঠিক হয়নি, তাই দ্বিতীয় স্যাটেলাইটে কত খরচ হবে, এটি এখনো অজানা।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ থেকে কত টাকা আয় হচ্ছে, এমন প্রশ্নে শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘এখন আমরা প্রথম স্যাটেলাইট থেকে বছরে ১২০ কোটি পাচ্ছি। এই টাকা টেলিভিশন চ্যানেলগুলো থেকে আসছে। প্রথম স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের ২০টি নিজেদের জন্য রেখে বাকি ২০টি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করব।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার।