বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে সব ধরনের নৌযান ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এতে আজ বুধবার সকাল থেকে সারা দেশের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে ১১ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করে আসছি। লঞ্চমালিকপক্ষ শুধু আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন করেনি আদৌ। গত এপ্রিল মাসে আমরা আন্দোলন করেছিলাম, ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলাম। মালিকপক্ষ বলেছিল, তারা ৪৫ দিনের মধ্যেই আমাদের দাবিদাওয়া পূরণ করে দেবে। কিন্তু এর মধ্যে ৯০ দিন অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত কোনো দাবিদাওয়া পূরণ করেনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ (২৩ জুলাই) মাঝরাত থেকে আমরা লাগাতার ধর্মঘট শুরু করেছি।’
অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান বলেন, নৌযান শ্রমিকদের মূল দাবিগুলো মেনে নিয়ে লঞ্চমালিকপক্ষ ২০১৬ সালে নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে পাঁচ বছরের একটি চুক্তি করেছিল। সে চুক্তির মেয়াদ আজও শেষ হয়নি। তিনি আরও বলেন, ঈদ সামনে রেখে নৌযানশ্রমিকেরা মানুষকে জিম্মি করে অযৌক্তিক দাবিদাওয়া দিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন।
নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, নৌযানশ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে ডাকা ধর্মঘটের কারণে আজ সকাল থেকে সমস্ত নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
নৌযানশ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে ঢাকা নদীবন্দর থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। হাতিয়াগামী ফল ব্যবসায়ী মনু ব্যাপারী (৬২) বলেন, ‘ভোর ছয়টার দিকে লঞ্চযোগে ঢাকায় আসি। পুরান ঢাকার বাদামতলী এলাকা থেকে ফল কিনে বেলা ১১টায় টার্মিনালে এসে শুনি লঞ্চ চলাচল বন্ধ। তাই মালামাল নিয়ে প্লাটুনে বসে আছি। কেউ জানে না কখন লঞ্চ ছাড়বে।’
একই দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন চাঁদপুরগামী মেহেরুন্নেসা বেগম। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল আমার ছোট বোনের বিয়ে। তাই সকাল নয়টার দিকে সদরঘাট টার্মিনালে পরিবার-পরিজন নিয়ে এসে শুনি লঞ্চ চলাচল বন্ধ। তাই ভাবছি, দুপুরের মধ্যে লঞ্চ না ছাড়লে বাসযোগে চাঁদপুরে চলে যাব।’