ঢাকা-১৪ আসনের বর্তমান সাংসদ আসলামুল হকের অস্থাবর সম্পদ গত ১০ বছরে ৪৫ গুণ এবং তাঁর স্ত্রীর বেড়েছে অন্তত চার গুণ। আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
বৃহত্তর মিরপুরের সাতটি ওয়ার্ড ও সাভারের একটি ইউনিয়ন নিয়ে ঢাকা-১৪ সংসদীয় আসন। এ আসন থেকে নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন আসলামুল হক। এবারের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন।
২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে আসলামুল হকের হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর মোট অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ১৬ লাখ ২৭ হাজার টাকা। এখন তাঁর অস্থাবর সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার ৪১৫ টাকার। ১০ বছর আগে তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ছিল ৬০ লাখ ৬৯ হাজার টাকার। এখন হয়েছে ২ কোটি ৬৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯২৯ টাকা। ২০০৮ সালের হলফনামায় আসলামুল হক তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার জায়গায় লিখেছিলেন অষ্টম শ্রেণি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে জমা দেওয়া হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘরে উল্লেখ করেছিলেন বিবিএতে অধ্যয়নরত। এবার হলফনামায় তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন ‘হায়ার ন্যাশনাল ডিপ্লোমা’।
হলফনামা অনুযায়ী, ২০০৮ সালে আসলামুল হকের নগদ টাকা ছিল ২ লাখ ১৯ হাজার ৮০০। এখন তাঁর কাছে নগদ টাকা আছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ৬৪ হাজার ১৬৯ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৬৫ হাজার ৭০০ টাকা। এখন এই খাতে তাঁর কোনো জমা টাকা নেই। ১০ বছর আগে তাঁর বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ছিল ১১ লাখ ৪০ হাজার টাকার। এখন এর পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৪ কোটি ৫১ লাখ ৫ হাজার ৮০০ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, আসবাব ও উপহার হিসেবে পাওয়া ৬২ ভরি সোনা ছাড়া আর কোনো অস্থাবর সম্পদ ছিল না। এবারের হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর সোনার পরিমাণ দুই ভরি কমেছে। তবে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে ৩০ লাখ টাকার বিনিয়োগ এবং মোটরযান খাতে ৬২ লাখ টাকার সম্পদ দেখানো হয়েছে। একক মালিকানাধীন ব্যবসায় বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৪২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪৬ টাকা। ২০০৮ সালে আসলামুল হকের দেনা ছিল ৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এবার মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড থেকে ৬৭ লাখ ১৫ হাজার ৩১৭ টাকা ঋণ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
২০০৮ সালে আসলামুল হক ও তাঁর স্ত্রীর আয়ের মূল উৎস ছিল ব্যবসা। এবার ব্যবসার পাশাপাশি দুজনের আয়ের সঙ্গেই শেয়ার, সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংক আমানত খাত থেকে আয় যোগ হয়েছে। এ ছাড়াও আসলামুল হক সাংসদ হিসেবে বার্ষিক ২৭ লাখ ২০ হাজার ২৫০ টাকা ভাতা হিসেবে পেয়েছেন।
অন্যদিকে ২০০৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী, আসলামুল হকের স্ত্রীর নগদ টাকা ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৫০০। এখন সেটি হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৪৩ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা টাকা ছিল মাত্র ২০ হাজার ৫০০ টাকা। এখন জমা টাকা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৩৫ লাখ। ২০০৮ সালে আসলামুল হকের স্ত্রীর বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ছিল ৫৪ লাখ টাকার। এখন সেটি হয়েছে ৬৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা।
এদিকে স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে আসলামুল হকের কৃষি জমি ১ দশমিক ৪০১৮৩ একর থেকে কমে শূন্য দশমিক ২৭৫০ একর হয়েছে।