১০ ঘণ্টা পর চবি ছাত্রলীগের অবরোধ স্থগিত

অবরোধের পর থেকে ক্যাম্পাসে অচল অবস্থা বিরাজ করছে। বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

স্থানীয় বাসিন্দাদের মারধরের অভিযোগের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একাংশের ডাকা অবরোধ ১০ ঘণ্টা পর স্থগিত করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোররাত চারটায় এ অবরোধ শুরু হয়; চলে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রাশেদ হাসান ও উপপক্ষ ভার্সিটি এক্সপ্রেসের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী। এ ঘটনা জানাজানি হলে অবরোধ শুরু হয়। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

ঘটনার বর্ণণা দিয়ে প্রদীপ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, রাত সাড়ে তিনটায় তিনি ও রাশেদ হাসান ১ নম্বর গেট থেকে মোটরসাইকেলে ক্যাম্পাসে আসছিলেন। একপর্যায়ে মদন ফকির মাজার এলাকায় এলে স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হানিফ ও তাঁর ভাই দলবল নিয়ে আক্রমণ করেন। তাঁকে লক্ষ্য করে দুটি গুলি ছোড়েন। তবে তাঁর গায়ে লাগেনি গুলি। একপর্যায়ে তিনি দৌড়ে ক্যাম্পাসে চলে আসতে সক্ষম হন।

এসব ঘটনা ক্যাম্পাসে জানাজানি হলে হানিফ ও তাঁর দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত অবরোধের ঘোষণা দেন উপপক্ষ ভার্সিটির এক্সপ্রেসের নেতা–কর্মীরা। পরে হানিফকে পুলিশ আটক করেছে—এমন খবরে অবরোধ স্থগিত করেন তাঁরা।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হানিফকে আটক করা হয়েছে। অন্যদেরও আটক করার চেষ্টা চলছে।

অভিযুক্ত হানিফ স্থানীয় ফতেহপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সদস্য বলে জানা যায়। এ ছাড়া তাঁর ক্যাম্পাস এলাকায় ডিশ ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা রয়েছে। পাশাপাশি তিনি আসবাবপত্র বিক্রি করেন।
তবে প্রদীপ চক্রবর্তীর অভিযোগ অস্বীকার করেন হানিফ ও তাঁর ভাই মোহাম্মদ ইকবাল। জানতে চাইলে ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দুই ভাই ঘুমাচ্ছিলেন। তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে। একই কথা বলেন হানিফ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে ও সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেছেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে

এদিকে আটকের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ইকবাল বলেন, তাঁর বাসায় রয়েছেন। আটকের বিষয়টি সত্যি নয়।

অবরোধ স্থগিতের বিষয়ে প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, হামলায় অভিযুক্ত সবাইকে তিন দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে তাঁরা আবার অবরোধ করবেন। ঘটনায় কোনো মামলা করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শিগগিরই তাঁরা হাটহাজারী থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করবেন।

মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মারধরের ঘটনায় অভিযান চালিয়ে একজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। শিগগিরই জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।