নবম থেকে ১৩ তম গ্রেডের (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা না রাখার সুপারিশ করেছে সরকার গঠিত কমিটি। এ-সংক্রান্ত কমিটির প্রতিবেদন আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দিয়েছে কমিটি। কমিটি নবম থেকে ১৩ তম গ্রেডের সব পদে মেধা ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করেছে।
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা, সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে করা কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম আজ সাংবাদিকদের এই কথা জানিয়েছেন। তিনি সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানান।
মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ বিষয়ে আইন বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন এটা যেহেতু সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়, এটা আদালতের রায়কে স্পর্শ করবে না, কোনো সমস্যা হবে না। মানে কোনো কোটাই থাকবে না।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের কোটার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শফিউল আলম বলেন, ‘আমরা এগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখেছি। দেখেই বলেছি, এখন কোটা না থাকলেও চলতে পারবে।’
নিচের পদের কোটার বিষয়ে শফিউল আলম বলেন, নিচেরগুলো আগে যা ছিল তাই, এগুলো তাদের কর্মপরিধিতেও ছিল না।
পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। পরবর্তী মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়তো আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে হবে। মন্ত্রিসভা পাস করলে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
৪০ তম বিসিএসে নতুন এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে কি না জানতে চাইলে শফিউল আলম বলেন, এতে (বিজ্ঞপ্তি) বলা আছে, সরকার যদি ভিন্নরূপ কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সে অনুযায়ী কোটা থাকবে।
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫৫ শতাংশ নিয়োগ হয় অগ্রাধিকার কোটায়। বাকি ৪৫ শতাংশ নিয়োগ হয় মেধা কোটায়। সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান এই কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটিতে সদস্য ছিলেন ছয়জন সচিব।
এদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসা শিক্ষার্থীদের একজন নেতা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আজ বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবেন।