জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিমকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালের ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগের উপপরিদর্শক( এসআই) মনিরুজ্জামান। এএসপি আনিসুর করিম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১০ আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে প্রত্যেককে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত ১০ আসামি হলেন, মাইন্ড এইড হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কথিত ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান, ওয়ার্ডবয় জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম ও শেফ মো. মাসুদ।
মানসিক সমস্যায় ভুগে গতকাল আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আনিসুল। ভর্তির পর কয়েক মিনিটের মধ্যেই মারা যান তিনি। পরিবারের অভিযোগ, ভর্তির পরপর হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গেছে, পুলিশ কর্মকর্তাকে ভর্তির পরই একটি কক্ষে নিয়ে হাসপাতালটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মারধর করছেন।
আনিসুল করিমের ভাই রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁর ভাই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁকে নিয়ে মাইন্ড এইড হাসপাতালে যান তাঁরা। যখন ভর্তির ফরম পূরণ করছিলেন, তখন কয়েকজন কর্মচারী তাঁকে দোতলায় নিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর তাঁদের জানানো হয় আনিসুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। এরপর তাঁরা তাঁকে হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আনিসুল করিমকে হত্যার অভিযোগে গতকাল সোমবার রাতে তাঁর বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি মামলা করেছেন।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, আদাবর থানার পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। তারা মনে করছে, এটি হত্যাকাণ্ড। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
হারুন অর রশিদ বলেন, হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেই। আনিসুলকে জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউট থেকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে নেওয়ার পেছনে কারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।