ক্যাসিনো-কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট সাত মাস এবং ঠিকাদার জি কে শামীম প্রায় দুই মাস ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইইউ) কেবিনে শুয়ে-বসে দিন কাটাচ্ছেন। চিকিৎসা শেষে তাঁদের কারাগারে ফেরত পাঠাতে বিএসএমএমইউকে পাঁচ দফা চিঠি দিয়েছে কারা প্রশাসন।
বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আহমেদ বলেন, আদালতের নির্দেশে তাঁদের ভর্তি করা হয়েছিল। এখন চিকিৎসকেরা চাইলে তাঁদের ছাড়পত্র দিতে পারেন।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের চিকিৎসক ‘বুকে ব্যথা’ জানিয়ে সম্রাটকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করেন।
বিএসএমএমইউর হৃদ্রোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক চৌধুরী মেসকাত আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, সম্রাটের হৃৎস্পন্দনের অনিয়মের কারণে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এর আগে গত ৬ অক্টোবর কারাগারে আসার এক দিন পর সম্রাটকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে এক সপ্তাহ থাকার পর সমালোচনার মুখে তাঁকে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর গত ২৪ নভেম্বর আবার তাঁকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়।
গত বছরের ৬ অক্টোবর র্যাব ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ক্যাসিনোর হোতা সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে।
তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র আইনে এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা আছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ঠিকদার জি কে শামীম কারাগারে আসেন ৫ এপ্রিল। এরপর দুই মাস ধরে তিনি হাসপাতালে আছেন। উচ্চপর্যায়ের তদবিরে তাঁকে কারাগার থেকে হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে।
গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জি কে (গোলাম কিবরিয়া) শামীমকে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
কারা হাসপাতালের চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, জি কে শামীমের ডান হাতে একটি ক্ষতের স্থানে প্লেট বসানো আছে। সেখানে ব্যথার কারণে তাঁকে বিএসএমএমইউর অর্থোপেডিক বিভাগে স্থানান্তর করা হয়।
জানতে চাইলে অর্থোপেডিক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, জি কে শামীমের অস্ত্রোপচারের সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি তাঁর ডান হাতের ক্ষতস্থান থেকে প্লেট অপসারণ করতে রাজি হচ্ছেন না। অস্ত্রোপচারের জন্য একজন চিকিৎসক প্রায় প্রতিদিনই বিএসএমএমইউর পরিচালকের কাছে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যাচ্ছে না। এখন পরিচালক বললেই জি কে শামীমকে তিনি ছাড়পত্র দিয়ে দিতে পারেন।