নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার জাহাজ্জ্যারচরে (বর্তমানে স্বর্ণদ্বীপ) ৬৬ পদাতিক ডিভিশন আয়োজিত যৌথ ম্যানুভার অনুশীলন-২০২২–এ একটি পদাতিক ব্রিগেড গ্রুপের আক্রমণের অনুশীলন প্রত্যক্ষ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
সেনাপ্রধান অনুশীলনস্থলে আসার পর তাঁকে অভ্যর্থনা জানান জিওসি, ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, রংপুর এরিয়া মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান। প্রায় ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট স্থায়ী অনুশীলনে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চৌকস সেনাসদস্যরা সত্যিকারের যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে আক্রমণ অনুশীলন সফলভাবে পরিচালনা করেন।
অনুশীলনে সেনাবাহিনীর পদাতিক বাহিনীর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক ট্যাংক, এপিসি, গোলন্দাজ বাহিনী, ইঞ্জিনিয়ার্স, কমান্ডোসহ সব আর্মস এবং সার্ভিসেস অংশগ্রহণ করে। এ ছাড়া মহড়ায় বিমানবাহিনী এবং আর্মি এভিয়েশনের যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার অংশ নেয়। ছত্রীসেনা অবতরণের মাধ্যমে স্বর্ণদ্বীপে আজ র্পূণাঙ্গ সমরের আবহ সৃষ্টি হয়।
সেনাপ্রধান অনুশীলন প্রত্যক্ষ শেষে সমাপনী বক্তব্যের শুরুতেই মহান আল্লাহ তাআলার প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং স্বাধীনতাযুদ্ধে শাহাদতবরণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতির অহংকার ও বিশ্বাসের জায়গা। এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণই সর্বোত্তম কল্যাণ—এই মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আভিযানিক দক্ষতা অর্জন করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা যুদ্ধের জন্য সেনাসদস্যদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এই আভিযানিক দক্ষতা, সাহসিকতা ও পেশাদারি অর্জনে সেনাসদস্যদের প্রশিক্ষণ হতে হবে বাস্তবসম্মত।
এ ছাড়া সেনাপ্রধান আভিযানিক সাফল্য অর্জনের লক্ষ্যে ভূপ্রকৃতি এবং সম্পদের সঠিক ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। অনুশীলনে অংশগ্রহণকারী সেনাসদস্যদের দক্ষতা ও উঁচু মানের প্রশিক্ষণের প্রশংসাও করেন তিনি। অনুশীলনে সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুশীলন প্রত্যক্ষ শেষে সেনাপ্রধান স্বর্ণদ্বীপে সেনাবাহিনী গৃহীত বিভিন্ন আর্থসামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় স্বর্ণদ্বীপে স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন ধরনের আর্থসামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে।
স্বর্ণদ্বীপে ব্যাপক বনায়নের পাশাপাশি ভিয়েতনামী নারকেলবাগান, ধান চাষসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদিত হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ফসলি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি করে দ্বীপটিকে খাদ্যভান্ডার হিসেবে পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে। বৃহৎ আকারে মৎস্য চাষসহ পশুপালন ও হাঁসের খামারের মাধ্যমে জাতীয় উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে এ এলাকা। প্রধানমন্ত্রীর সুদূরপ্রসারী প্রজ্ঞা ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের সফল বাস্তবায়ন এবং সেনাবাহিনীর সক্রিয় তদারকিতে স্বর্ণদ্বীপে আজ একটি সম্ভাবনাময় নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। সেনাপ্রধান পরিদর্শন শেষে গৃহীত কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
আইএসপিআর