স্থগিত তিন কেন্দ্রে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা বিএনপি প্রার্থীর

সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। গতকাল বেলা একটার দিকে জেলা শহরের পূর্ব মেড্ডা এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। গতকাল বেলা একটার দিকে জেলা শহরের পূর্ব মেড্ডা এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো

ভোটের দিন গোলযোগ ও সংঘর্ষের কারণে তিনটি কেন্দ্রের ফল স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। এসব কেন্দ্রে আগামী সোমবার ভোট নেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনে স্থগিত হওয়া তিনটি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট হওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। গতকাল শনিবার জেলা শহরের পূর্ব মেড্ডায় নিজের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুস সাত্তার বলেন, ‘এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কতিপয় দুষ্কৃতকারী বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমার দলের নেতা-কর্মী ও লোকজনকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এসব কারণে আমিসহ দলীয় লোকজন চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে আছি।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মঈনউদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন গোলযোগ ও সংঘর্ষের কারণে এই আসনের তিনটি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। এসব কেন্দ্রে ভোট রয়েছে ১০ হাজার ৫৭৪টি। বাকি সব কেন্দ্রের ফল অনুযায়ী বিএনপির প্রার্থী ১০ হাজার ১৫৯ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মঈনউদ্দিন। আগামী বুধবার ওই তিনটি কেন্দ্রে আবার ভোট নেওয়া হবে। কেন্দ্রগুলো হলো আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর, যাত্রাপুর ও সোহাগপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

গতকাল বেলা একটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির প্রার্থী সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ভোটের দিন প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের অন্যায় কর্মকাণ্ডের কারণে বিএনপির দুর্গখ্যাত ওই তিনটি কেন্দ্রের ফল স্থগিত হয়। অতীতের সব নির্বাচনে এসব কেন্দ্রে বিএনপির প্রার্থী জয় পেয়েছেন। এবারও সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপির পক্ষে সর্বোচ্চ ভোট পড়বে। দলীয় নেতা-কর্মী ও নানা মাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন, ওই তিনটি কেন্দ্রে মৃত এবং বিদেশে অবস্থানরত ৫৬৩ জন ভোটার রয়েছেন। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিলে আবার ভোট নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

গত বৃহস্পতিবার সাংসদদের শপথ অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ না করার বিষয়টি উঠে আসে সংবাদ সম্মেলনে। এ নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপির এ প্রার্থী বলেন, এটি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত। শপথ গ্রহণের জন্য তিন মাস সময় আছে। তিন মাস তো পার হয়নি। কাজেই যখন সময় আসবে দলের সিদ্ধান্ত জানা যাবে। কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই মানা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক, সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। তবে আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী সেখানে ছিলেন না।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ১৩২টির মধ্যে ১২৯ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ধানের শীষের প্রার্থী সাত্তার ভূঁইয়া পেয়েছেন ৮২ হাজার ৭২৩ ভোট। কলার ছড়া প্রতীকে মঈনউদ্দিন পেয়েছেন ৭২ হাজার ৫৬৪ ভোট।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ ও নানা দাবি নিয়ে জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈনউদ্দিন বলেন, কয়েকজন নেতা-কর্মীর ইন্ধন ও সহযোগিতায় বিএনপির প্রার্থী এমন দাবি করছেন। তাঁর দাবি ও অভিযোগ সত্য নয়। এ তিনটি কেন্দ্রের ৬-৭ জন ভোটার মারা গেছেন। বড়জোর ৫০-৬০ জন বিদেশে রয়েছেন। ইতিমধ্যে ৭-৮ জন বিদেশ থেকে চলে এসেছেন। আরও অনেকেই আসবেন।