সৌদি আরবে ফিরে যেতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ও ফ্লাইটের দাবিতে আজ বুধবারও বিক্ষোভ করছেন সৌদিপ্রবাসীরা।বেলা পৌনে দুইটার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা। এতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে তাঁরা রমনা এলাকার ইস্কাটনে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘেরাও করেছেন। এ সময় তাঁরা মন্ত্রণালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
‘আমরা বেশ কিছু দাবি নিয়ে এসেছি। আমাদের প্রধান দাবি হলো ইকামা। ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করা। দ্বিতীয় দাবি হলো, আমরা অনেকেই রিটার্ন টিকিট নিয়ে এসেছি। আমরা যেন সেই টিকিটে ফিরে যেতে পারি। তৃতীয় দাবি হলো, আমাদের টিকিটের মূল্য যেন বেশি রাখা নাহয়। অন্যান্য এয়ারলাইনস যেন হয়রানি না করে।
প্রবাসীদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের আজ বৈঠকের কথা রয়েছে। পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার এস এম শামীম এ কথা জানিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সামনের সড়কের একপাশে প্রবাসীরা অবস্থান করছেন। দুপুরে তাদের পাঁচজনের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের বৈঠক হবে।
ঘটনাস্থলে প্রবাসী তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু দাবি নিয়ে এসেছি। আমাদের প্রধান দাবি হলো ইকামা। ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করা। দ্বিতীয় দাবি হলো, আমরা অনেকেই রিটার্ন টিকিট নিয়ে এসেছি। আমরা যেন সেই টিকিটে ফিরে যেতে পারি। তৃতীয় দাবি হলো, আমাদের টিকিটের মূল্য যেন বেশি রাখা নাহয়। অন্যান্য এয়ারলাইনস যেন হয়রানি না করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় সে জন্য আমরা এসেছি। একটু পরে মন্ত্রীসহ সচিব ও প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করব আমরা।’
সকাল ৯টার দিকে সৌদি প্রবাসীরা রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কিছুক্ষণ সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এরপর তাঁরা প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যান। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার রুবায়েত জামান যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন। কারওয়ানবাজারে সৌদি এয়ারলাইনসের কার্যালয়ের সামনে কয়েকজনকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে।
ফেরার টিকিটের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সড়ক অবরোধ করে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেন আটকে পড়া প্রবাসীরা। গতকাল তিন ঘণ্টা বিক্ষোভের পর সড়ক অবরোধ তুলে নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। ওই সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক চলছিল। বৈঠকের পর দেশে আটকে পড়াদের ইকামা-ভিসার মেয়াদ তিন মাস বাড়াতে সৌদি আরব সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
১৫ সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর অনুমতি দেয় সৌদি সরকার। সৌদি এয়ারলাইনসকে সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট চালানোর অনুমতি দেয় সরকার। কিন্তু বাংলাদেশ বিমানকে ফ্লাইট চালানোর অনুমতি দেয়নি সৌদি কর্তৃপক্ষ। আর এতে বিপাকে পড়েন প্রবাসীরা। কেননা অধিকাংশেরই ফিরতি টিকিট সৌদি এয়ারলাইনস ও বিমানে করা আছে।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার রুবায়েত জামান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সৌদি এয়ারলাইনসের চলতি মাসে ৪টি ফ্লাইটে ১ হাজার ৬০টি টিকিট ছিল, যার সবই বিক্রি হয়ে গেছে। বিমানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সৌদি আরবে ল্যান্ডিং অনুমতি পেলে আগামী ১ অক্টোবর থেকে সৌদি আরবে তারা সপ্তাহে আটটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
বিমানের মহাব্যবস্থাপক (এমডি) প্রধান নির্বাহী (সিইও) মো. মোকাব্বির হোসেন গতকাল বলেন, বিমানকে আটটি ফ্লাইটের স্লট দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ল্যান্ডিং পারমিশন দেয়নি। পারমিশন মিললেই ফ্লাইট চালু করতে পারব।’
সমস্যা সমাধানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মহিবুল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছি। আর সৌদি এয়ারলাইনস যদি আমাদের কাছে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন করে, তবে আমরা তা দিয়ে দেব। কিন্তু তারা ফ্লাইট বাড়ানোর আবেদনই করেনি।’