সেই হত্যারহস্যের কিনারা হয়নি ৭ মাসেও

>

• বাসা থেকে অন্তঃসত্ত্বা নারীর লাশ উদ্ধারের মামলা
• ৩ বছর বয়সী শিশুটি এখনো খুঁজে বেড়াচ্ছে তার মাকে

সাত মাস আগে চট্টগ্রামে বাসা থেকে আইনজীবীর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিবি রহিমার (২৭) হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধারের মামলার কোনো কিনারা হয়নি। কেন, কী কারণে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে তা অজানা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিল নিহতের তিন বছর বয়সী এক কন্যাসন্তান। বাসায় ছিল না আর কেউ।

গত বছরের ১ আগস্ট নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট ফরিদারপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে বিবি রহিমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক এহতেশামুল পারভেজ সিদ্দিকীর স্ত্রী। এই ঘটনায় নিহতের মা বেদুরা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে চান্দগাঁও থানায় হত্যা মামলা করেন।

লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল নিহত রহিমা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাঁর হাত-পা ওড়না দিয়ে বাঁধা ছিল। মৃত্যুর পর তার হাত-পা বাঁধা হয়। এর আগে শ্বাসরোধে তাঁকে খুন করা হয়। তবে শরীরের আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না। শুধু নাক দিয়ে রক্ত পড়েছিল। ঘটনার পর শিশুটি কীভাবে তার মায়ের মৃত্যু হয় কিছুই আঁচ করতে পারেনি।

ঘটনার পর মামলাটি তদন্ত করে চান্দগাঁও থানার পুলিশ। পরে এটি নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইলিয়াছ খান মামলাটি তদন্ত করছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তে এখনো বলার মতো কোনো অগ্রগতি নেই। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনটি পাওয়া যায়নি। শিগগিরই পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এটি পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।

তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, কাউকে আটক করা যায়নি। তবে অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে এখন বলা যাবে না।

মামলার বাদী ও নিহতের মা বেদুরা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, পরিকল্পিতভাবে তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। যাতে কোনো চিহ্ন রাখা হয়নি। তাঁর দাবি খুনিরা পরিচিত কেউ। না হলে এভাবে দিনদুপুরে ঘরে ঢুকে কেউ খুন করে আবার বেরিয়ে যেতে পারে না। অপরিচিত কেউ খুন করলে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কেউ না কেউ দেখত।

সম্প্রতি ওই এলাকায় গেলে আশপাশের বাসিন্দারা জানান ঘটনার দিন অপরিচিত কাউকে তাঁরা দেখেননি। ঘটনার বিষয়েও তাঁরা কিছুই জানেন না।

এদিকে নিহতের তিন বছর বয়সী শিশুটি এখনো তার মাকে খুঁজছে। সে জানে না তার মা আর ফিরে আসবেন না। মা বলে ডাকতে পারবে না। সে প্রতিদিনই মাকে খুঁজে। আর মা আসবে বলে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে রাখা হয়। শিশুটি বর্তমানে তার বাবার সঙ্গে রয়েছে।

নিহতের স্বামী এহতেশামুল পারভেজ সিদ্দিকী চান স্ত্রীর খুনিরা ধরা পড়ুক। তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। এরপরও কেন এই ঘটনা তিনি বুঝতে পারছেন না।