সবে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। একটু পরেই আলোর ঝরনাধারা ছড়িয়ে দেবে নতুন বছরের সূর্য। সহস্র কণ্ঠ যেন সেই নতুন বছরের নতুন আলোকে আবাহন জানাতে অপেক্ষায় ছিল। বাংলা নতুন বর্ষ ১৪২১কে স্বাগত জানাতে সুরের ধারার শিল্পীরা গেয়ে উঠলেন ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো।’ ভোরের নরম কোমল আলো আর রবীন্দ্রসংগীতের সুরের ইন্দ্রজালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র চত্বরে সৃষ্টি হলো এক মাঙ্গলিক আবহ।
পুরোনো বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সুরের ধারার সহস্র শিল্পী সুরে সুরে মেতেছিলেন। লাক্সের পৃষ্ঠপোষকতায় চ্যানেল আই ও সুরের ধারা যৌথভাবে ‘হাজারো কণ্ঠে বর্ষবরণ ১৪২১’-এর এ আয়োজন করেছিল। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার নেতৃত্বে ভোর সাড়ে পাঁচটায়, ঠিক সূর্য ওঠার পরপরই শিল্পীরা গেয়ে ওঠেন বৈশাখকে স্বাগত জানিয়ে সেই চিরনতুন গান।
হাজারো কণ্ঠের শিল্পীদের নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা একক কণ্ঠে গাইলেন ‘ওঠো ওঠো রে’, ‘ভোর হল বিভাবরী’সহ কয়েকটি গান। দেশের খ্যাতিমান শিল্পীরা অংশ নিয়েছেন এ আয়োজনে। ফাহমিদা নবী গাইলেন ‘ও আমার দেশের মাটি, তোমার ’পরে ঠেকাই মাথা।’ ফাঁকে ফাঁকে চলেছে হাসান ইমামের আবৃত্তি আর দিল আফরোজ রেবার পল্লিগীতি।
জনাকীর্ণ অনুষ্ঠানটির সূচনা হয় আগের দিন চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। অনুষ্ঠানে সুরের ধারার শিল্পীদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা এক হাজার কণ্ঠের কোরাসে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রসংগীত, দেশাত্মবোধক ও লোকসংগীত।
সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্ল্লিউ মজীনা, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল বাকের, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর প্রমুখ।
বর্ষবরণ উৎসব আরও রঙিন করতে বসেছিল বাঙালির ঐতিহ্যে লালিত বৈশাখী কারুশিল্প মেলা। পিঠাপুলি, মাটির তৈরি তৈজস, বেত, কাঁথা, পিতল, পাটজাত দ্রব্যসহ রকমারি পণ্যে সজ্জিত ছিল মেলার স্টলগুলো।
খ্যাতিমান শিল্পীদের মধ্যে গান করেছেন সুজিত মোস্তফা, সুবীর নন্দী, রফিকুল আলম, ফাহমিদা নবী, লিলি ইসলাম, নাশিদ কামাল, শাহনাজ নাসরিন, চম্পা বণিক প্রমুখ। আইয়ুব বাচ্চুর গান ও মিউজিক কম্পোজিশন মুগ্ধ করে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের বাহারি সাজের পোশাকে ফ্যাশন শোতে অংশ নেন লাক্স তারকারা।