সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমেছে ১৫ দিন পর শনিবার সকাল ৬টার সময়। দুপুরের দিকে আরও নিচে নামে। দুপুর ১২টার দিকে সেখানে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ১২ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার দিয়ে। শনিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ডেইলি ওয়াটার লেভেল ডেটার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন পাউবোর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার।
সুরমা নদী সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা দিয়ে প্রবাহিত দীর্ঘতম নদী। এ নদীর পানির প্রবাহ পরিমাপ করা হয় সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা ও সিলেট শহর পয়েন্টে। কানাইঘাটের লোভাছড়ার কাছে লোভা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে সুরমা। উজানে ভারী বৃষ্টি হলে লোভা থেকে সুরমায় পানির প্রবাহ বাড়ে। ৭ জুলাই প্রথম দফা পাহাড়ি ঢলে সুরমার পানি বাড়ে। এরপর ৯ জুলাই থেকে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু হয়।
পাউবো জানায়, কানাইঘাটে সুরমার পানির বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। ডেইলি ওয়াটার লেভেল ডেটায় দেখা গেছে, কানাইঘাটে ৭ জুলাই পানি বাড়া শুরু হয়। ওই দিন ১২ দশমিক ০১ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে আবার কমে ছিল। পরদিন ৯ জুলাই বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এরপর থেকে ২০ জুলাই এক বেলা বিপৎসীমার নিচে নেমে আবার বেড়ে ১৩ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পানি কমতে শুরু করে। সন্ধ্যা ৬টায় ১২ দশমিক ৯১ সেন্টিমিটার থেকে নেমে শনিবার সকাল ৬টা ও ৯টার দুটো পরিমাপে দুই ধাপে পানি কমে দুপুর ১২টায় ১২ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাউবোর নদ-নদী পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, প্রায় পক্ষকাল গড়িয়ে সুরমার পানি ভাটা ধরায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা দেখা দিল।
এদিকে সুরমার দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা থেকে নেমে গেলেও সিলেট অঞ্চলের আরেক বৃহৎ নদী কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা থেকে নামেনি। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা, শনিবার সকাল ৬টা, ৯টা ও দুপুর ১২টায় ফেঞ্চুগঞ্জে পানি ৯ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। তবে এই নদীর অন্য তিনটি পয়েন্টে যথাক্রমে উৎসমুখের অমলসিদ, বিয়ানীবাজারের শেওলা ও মৌলভীবাজারের শেরপুর পয়েন্টে দিয়ে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে দিয়ে পানি ধীরে কমা প্রসঙ্গে পাউবোর নদী পর্যবেক্ষকেরা জানিয়েছেন, নদীর মধ্যবর্তী অংশ ফেঞ্চুগঞ্জ। এ জন্য উজান থেকে ভাটির দিকে পানির টান না থাকায় অপরিবর্তিত অবস্থায় রয়েছে পানি। তবে উজানে বৃষ্টি না হলে ভাটির দিকে পানির টান বাড়লে সেখানে পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুরমা-কুশিয়ারা ছাড়াও পানি কমছে সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিতি সারী, লোভা ও ধলাই নদের পানি। শনিবার সকাল ও দুপুরে সারী নদী দিয়ে ১০ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার থেকে নেমে ১০ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। লোভা নদীতে ১৩ দশমিক ৯৪ থেকে নেমে ১৩ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার ও ধলাই নদে শনিবার সকাল ৬টায় ১০ দশমিক ৯০ থেকে নেমে দুপুরে ১২টায় ১০ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।