কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে রাতের অন্ধকারে ছাত্রীদের বের করে দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মঞ্চ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। পাশাপাশি সংগঠনটির পক্ষ থেকে ওই হলের প্রাধ্যক্ষ সাবিতা রেজওয়ানার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেল চারটায় এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে বের করে দেওয়া আট শিক্ষার্থীকে সম্মানের সঙ্গে হলে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আন্দোলনকারীদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমরা দুই মাস আন্দোলন করেছি। কিন্তু যখনই আন্দোলন সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌঁছেছে, তখনই হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হলে হলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু এখন আন্দোলন করতে গেলে বাধা আসে। প্রশাসনকে বলতে চাই, হেনস্তা করবেন না। হলে সুন্দরভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করুন। হল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিন। আজকে আমাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে মেয়েদের উপস্থিতি কম। কারণ তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে।’
সংগঠনটির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক বলেন, আটজন ছাত্রীকে মিথ্যা ভয়ভীতি দেখিয়ে কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সম্মানের সঙ্গে ওই ছাত্রীদের হলে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। নয়তো ছাত্রসমাজ আবার রাজপথে নামবে। তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাধ্যক্ষের একটি অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে তিনি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত দুই হাজার ছাত্রীকে বহিষ্কারের কথা বলেন। এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ ঘটনার মাধ্যমে হল প্রশাসনের নৈতিক অবক্ষয় ঘটেছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলঙ্কিত ইতিহাস রচিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান রক্ষার্থে হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করে বলেন, ছাত্রসমাজের স্থান ক্লাসে, তাঁদের রাজপথে নামতে বাধ্য করবেন না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে নুরুল বলেন, কোটার বিষয়টি নিয়ে তাঁর সন্তানদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করে সন্তানদের অস্থিরতা দূর করার আহ্বান জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হক বলেন, নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হলে তাঁরা প্রতিবাদ করবেন। কিন্তু কেউ যদি সহিংসতায় জড়িত থাকে, তার দায়ভার তাঁরা নেবেন না।
প্রসঙ্গত, সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে ওই ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দিয়েছে কবি সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষ।
হলের সাধারণ ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, হলের প্রাধ্যক্ষ ছাত্রীদের ছাত্রত্ব বাতিল, গোয়েন্দা নজরদারি ও মামলার ভয় দেখাচ্ছেন।
ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দেওয়া প্রসঙ্গে হলের প্রাধ্যক্ষ ও যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবিতা রেজওয়ানা বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে ডেকেছি। তাঁদের মোবাইল চেক করা হয়েছে। তাঁরা ফেসবুকে ফেক অ্যাকাউন্ট খুলে গুজব ছড়াচ্ছে। মুচলেকা দিয়ে স্থানীয় অভিভাবকদের সঙ্গে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’