সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় এক রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্যদের জন্মসনদ দেওয়ায় উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়।
আজ সোমবার প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিজেন ব্যানার্জি।
মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মিয়ানমার থেকে ১২ সদস্যের পরিবার নিয়ে বাংলাদেশের টেকনাফে চলে আসেন রোহিঙ্গা নাগরিক আবদুছ ছবুর। সেখানে পরিচয় হয় তাহিরপুর উপজেলার এক ব্যক্তির সঙ্গে। ওই ব্যক্তির মাধ্যমে আবদুছ ছবুর চলে আসেন তাহিরপুরে। এরপর তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়নের গুটিলা গ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন তিনি। ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার গুটিলা গ্রাম থেকে আবদুছ ছবুরের পরিবারকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ইউপি চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিনের দেওয়া পাঁচটি জন্মসনদ জব্দ করা হয়। পরে তাঁদের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
রোহিঙ্গাদের জন্মসনদ দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করে। উপসচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এ–সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮–এর ৯ ও ১০ ধারায় জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদানের বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রতিপালন করেননি। তিনি রোহিঙ্গাদের জন্মসনদ প্রদান করে সরকারের আদেশ অমান্য করেছেন। বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তাই স্থানীয় সরকার/ইউনিয়ন পরিষদ আইন-২০০৯–এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাঁকে ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
তাহিরপুরের ইউএনও প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ইউপি চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্তের চিঠি পেয়েছি। এখন সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’