সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কালিয়াগুটা হাওরে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ আরও ছয়জনের লাশ আজ বুধবার সকালে উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১০। এদের মধ্যে সাতজনই শিশু। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন এসব লাশ উদ্ধার করেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার করা হয় চার শিশুর লাশ। আজ বেলা একটার দিকে নিখোঁজ তাসমিনার (১১) লাশ উদ্ধার করা হয়।
নৌকাডুবিতে প্রাণ হারানো ব্যক্তিরা হলেন মাছিমপুর গ্রামের জমসেদ আলীর মেয়ে শান্তা মনি (৩), আরজ আলীর স্ত্রী রহিতুন্নেছা (৩৫), আফজাল হোসেনের ছেলে আসাদ (৫), বাবুল মিয়ার ছেলে শামীম (২), বদরুল মিয়ার ছেলে আবির (৩), পেরুয়া গ্রামের নসিবুল্লার স্ত্রী করিমা বিবি (৭৮), একই গ্রামের ফিরোজ আলীর ছেলেশিশু আজম (২) এবং নোয়ারচর গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে সোহান (৩) ও আজিরুন নেছা (৩৫)। মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার করা হয় আবির, শামীম, আজম ও সোহানকে। অন্যদের উদ্ধার করা হয় আজ সকালে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের মাছিমপুর গ্রাম থেকে চরনারচর ইউনিয়নের পেরুয়া গ্রামে যাচ্ছিল। নৌকায় নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৩১ জন যাত্রী ছিলেন। পথে কালিয়াগুটা হাওরের আইনুল বিলে নৌকাটি ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধারের চেষ্টা চালান। রাত ১০টা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে চার শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার কাজ চালানো যায়নি। আজ সকালে স্থানীয় লোকদের নিয়ে পুলিশ উদ্ধার কাজে নামে। পরে হাওরের পানি থেকে একে একে আরও ছয়টি লাশ উদ্ধার করা হয়।
রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. কুটি মিয়া জানান, তাঁর গ্রামের পাশেই ঘটনা ঘটেছে। তারা নৌকাডুবির পরপর মানুষের চিৎকার শুনে কয়েকটি ছোট নৌকা নিয়ে সেখানে যান। কিন্তু তখন ঝড়-বৃষ্টি থাকায় ঠিকমতো উদ্ধার কাজ চালাতে পারেননি। রাত ১০টা পর্যন্ত হাওর থেকে চার শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। আজ সকালে আবার গ্রামবাসী হাওরে গিয়ে নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি চালান। পরে আরও ছয়টি লাশ উদ্ধার করা হয়।
রফিনগর ইউপির চেয়ারম্যান রেজওয়ান খান বলেন, নৌকাতে ৩১ জন যাত্রী ছিলেন। নৌকা ডুবে যাওয়ার পর অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠলেও ১০ জন নিখোঁজ হন। এই ১০ জনের মধ্যে সবারই লাশ উদ্ধার হয়েছে। তিনি বলেন, মাছিরপুর থেকে প্রতিদিনই নৌকায় করে যাত্রীরা পেরুয়া এলাকায় যান। গতকালও একইভাবে যাত্রী নিয়ে নৌকাটি রওনা হয়। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেনি। ঝড় শুরু হলে ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধার করা লাশগুলো এখন পর্যন্ত মাছিমপুর গ্রামেই আছে।