শীর্ষ সন্ত্রাসী শেখ মো. আসলাম ওরফে সুইডেন আসলাম যে ১১টি মামলায় খালাস পেয়েছেন, সেগুলোর রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে সরকার। এ ছাড়া জেলখানায় থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী ও তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা যেসব গুরুত্বপূর্ণ মামলায় খালাস বা জামিন পেয়েছেন, সেসব মামলায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এসব আসামি জামিনে কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার আগে সব গোয়েন্দা সংস্থা থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
কারা সূত্র জানায়, কোনো সাক্ষী না পাওয়ায় নব্বইয়ের দশকের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম হত্যা, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র বহনের ১১টি মামলা থেকেই খালাস পেয়ে গেছেন। বর্তমানে বাকি আছে তেজগাঁওয়ের যুবলীগ নেতা মাহমুদুল হক খান ওরফে গালিবকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলা। এই মামলায়ও যদি তিনি খালাস পান, তাহলে তাঁর কারামুক্ত হতে আর কোনো বাধা থাকবে না। এ কারণে সুইডেন আসলামের সব মামলার আপিলের জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে জরুরি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
সুইডেন আসলাম বর্তমানে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে রয়েছেন। ২০ বছর আগে এই সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ চন্দ্রের মতো সুইডেন আসলামও কারাগার থেকে গোপনে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এ অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শঙ্কা প্রকাশ করে সুইডেন আসলাম গোপনে মুক্তি পেয়ে যাতে না বের হতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে বন্দী অবস্থায় কারা অধিদপ্তরের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাঁর কাছ থেকে দুটি মুঠোফোন জব্দ করে। কারাগারে থেকেই মুঠোফোনে অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
জানতে চাইলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু সুইডেন আসলাম এখন আমাদের কড়া নিরাপত্তায় রয়েছেন।’
এদিকে সুইডেন আসলামের মুক্তির ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে পুলিশ বিভাগ। ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুইডেন আসলাম জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানিয়েছি। সরকার চায় না এই শীর্ষ সন্ত্রাসী পালিয়ে থাকুক। এ ব্যাপারে জেল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। আমরা অত্যন্ত সতর্ক রয়েছি।’
২০০১ সালের ২৭ ডিসেম্বর তৎকালীন পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলামসহ ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপর ২০১০ সালের ৪২ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নতুন তালিকাতেও তার নাম রয়েছে।