চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার সময় দায়িত্বশীল কেউ ছিলেন না। তাই ফায়ার সার্ভিস জানতে পারেনি কনটেইনারে অতি দাহ্য হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড ছিল। এ কারণেই কনটেইনার ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা হতাহত হন। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আজ রোববার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সময় সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে দায়িত্বরত বা দায়িত্বশীল কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এতে ফায়ার সার্ভিসকে সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ, ফায়ার সার্ভিস কনটেইনারে কী ছিল, কেমিক্যাল ছিল কি না, তা শনাক্ত করতে পারেনি। ফলে প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা হতাহত হন। পরে ফায়ার সার্ভিস নিজেরাই শনাক্ত করে কনটেইনারে অতি দাহ্য হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড ছিল। ফায়ার সার্ভিসের যেসব সদস্য নিহত হয়েছেন, তাঁরা প্রথম ধাপে আগুন নেভাতে গিয়েছিলেন।
আগুন নেভানোর যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের কোনো ঘাটতি ছিল কি না জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কেমিক্যাল ইকুইপমেন্টের কোনো ঘাটতি ছিল না। কনটেইনারে হাইড্রোজেন পার–অক্সাইডের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের দুটি কেমিক্যাল টেন্ডার, কেমিক্যাল সরঞ্জামবাহী গাড়ি এবং হ্যাজারডাস মেটারিয়াল বিশেষজ্ঞ দল আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। এরপর আর কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সকাল থেকে আগুন কর্ডন করে নিয়ন্ত্রণে এনে নেভানোর চেষ্টা চলছে।
গতকাল শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর রাত ১১টার দিকে রাসায়নিক ভর্তি একটি কনটেইনারে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলের আশপাশের অন্তত চার বর্গকিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল থেকে বলা হয়েছে, সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৯ কর্মী নিহত হয়েছেন। চট্টগ্রামে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৫ জন চিকিৎসাধীন। নিখোঁজ আছেন ৪ জন কর্মী। গুরুতর আহত দুই কর্মীকে চট্টগ্রাম সিএমএইচ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় আনা হয়েছে।