চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক রোবোটিক অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি। রিমোটের সাহায্যে এ গাড়ি চালানো হয়। কোনো মানুষ ছাড়াই এ গাড়ি দিয়ে পানি ছিটানো যায়।
রোবোটিক গাড়িটি দেখতে যুদ্ধে ব্যবহৃত ট্যাংকের মতো। এই গাড়ি একেবারে আগুনের কাছাকাছি চলে যেতে পারে। যেকোনো দূরত্ব থেকে পানি ছিটাতে সক্ষম। দূর থেকে একজন অপারেটর রিমোটের সাহায্যে গাড়িটিকে সামনে–পেছনে আনা–নেওয়া করেন। মঙ্গলবার আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসার পর বিএম ডিপো থেকে গাড়িটি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনে এনে রাখা হয়েছে।
বিএম ডিপোতে শনিবার রাত পৌনে ১১টায় বিস্ফোরণের পর ঢাকা থেকে এই গাড়ি চট্টগ্রাম আনা হয়। দূরনিয়ন্ত্রিত রিমোট কন্ট্রোল রোবোটিক এই গাড়ি রোববার চট্টগ্রাম এসে পৌঁছায়। এরপর বিএম ডিপোতে অগ্নিনির্বাপণের কাজে ব্যবহার করা হয় গাড়িটি। এই গাড়ি প্রথমবারের মতো এ ধরনের অগ্নিনির্বাপণে ব্যবহার করা হলো বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস সূত্র।
ফায়ার সার্ভিসের গণসংযোগ কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার বলেন, রিমোট কন্ট্রোল এমন গাড়ি রয়েছে দুটি। দুটিই ঢাকায় থাকে। দুর্ঘটনার পর গাড়িটি ঢাকা থেকে পাঠানো হয়। হাইটেক এই গাড়ির সুবিধা হলো ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ছাড়া তীব্র গতিতে পানি ছিটাতে পারে। ফলে প্রাণহানি এড়ানো যায়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, কনটেইনারে রাসায়নিক আছে কি না, তা এই গাড়ি দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। রাসায়নিক সন্দেহ হলে ওই কনটেইনারের আশপাশে প্রথমে এই গাড়ি পাঠানো হয়। আর রাসায়নিক পদার্থ নেই, এটা নিশ্চিত হওয়ার পর সাধারণ গাড়ি দিয়ে কর্মীরা অগ্নিনির্বাপণে অংশ নেন। আর পানি ছিটানোর পর যদি দেখা যায় আগুন আরও তীব৶ হচ্ছে, তখন সাবধানতা অবলম্বন করা হয়।
শনিবার নয়টার দিকে বিএম ডিপোতে আগুন লাগে। এরপর প্রথমে কুমিরা ও সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের দুটি গাড়ি অগ্নিনির্বাপণে অংশ নেয়। একপর্যায়ে বিস্ফোরণ হলে এই দুই গাড়ির ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা হতাহত হন। গাড়ি দুটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রামের উপপরিচালক আনিসুর রহমান বিএম ডিপোর অগ্নিকাণ্ড–সম্পর্কিত ব্রিফিংকালে বলেন, আগুন নেভাতে ঢাকা থেকে অত্যাধুনিক গাড়ি আনা হয়। পাশাপাশি দূরনিয়ন্ত্রিত গাড়িও ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম ও আশপাশের জেলার ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ইউনিটও সীতাকুণ্ডে অগ্নিনির্বাপণে কাজ করেছে।