ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় নতুন করে প্লাস্টিক আচ্ছাদিত বা লেমিনেটেড পোস্টার উৎপাদন, ছাপানো ও প্রদর্শন না করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে আজ বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে সারা দেশে নির্বাচনের সময় ও অন্যান্য ক্ষেত্রে প্লাস্টিক আচ্ছাদিত বা লেমিনেটেড পোস্টার উৎপাদন ছাপানো ও প্রদর্শন বন্ধের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, শিল্পসচিব, স্বাস্থ্যসচিব ও দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে ‘লেমিনেটেড পোস্টার ইন সিটি পোলস: এ বিগ থ্রেড টু এনভায়রনমেন্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপানো হয়। প্রতিবেদনটি নজরে এনে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার আরজি জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক ও সুলায়মান হাওলাদার।
আদেশের বিষয়টি জানিয়ে মনোজ কুমার ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় নতুন করে প্লাস্টিক আচ্ছাদিত বা লেমিনেটেড পোস্টার উৎপাদন, ছাপানো ও প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে সামনে রেখে সাঁটানো বা প্রদর্শিত পোস্টার নির্বাচনের পরপর যথাযথভাবে অপসারণ ও ধ্বংসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মনোজ কুমার ভৌমিক বলেন, প্লাস্টিক আচ্ছাদিত বা লেমিনেটেড পোস্টার পরিবেশের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, জলবায়ু উষ্ণতার অন্যতম কারণও। সে কারণে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়।
ডেইলি স্টারের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিচ্ছন্ন সবুজ নগরী উপহার দেওয়ার কথা বললেও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্লাস্টিকে মোড়ানো (লেমিনেটেড) নির্বাচনী পোস্টারে ছেয়ে ফেলেছেন গোটা ঢাকা শহর। প্লাস্টিকের ব্যবহার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলেও বৃষ্টি, কুয়াশা, আর্দ্রতা কিংবা ধুলাবালি থেকে পোস্টারগুলো রক্ষা করার জন্য তারা প্লাস্টিকের ব্যবহার করছেন। পরিবেশবিদরা বলছেন, পোস্টার প্লাস্টিকে মোড়ানোর (লেমিনেটেড) কারণে পরিবেশের জন্য মহাবিপর্যয় অপেক্ষা করছে। একদিকে এই প্লাস্টিক নষ্ট হবে না। অন্যদিকে, একে পুনরায় ব্যবহার করারও সুযোগ নেই। তাঁরা আরও বলেছেন, বছরের পর বছর ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পড়ে থেকে পরিবেশের ক্ষতি করা ছাড়া এগুলোর আর কোনো কাজ নেই। বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক নর্দমায় গিয়ে জমা হয়ে বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণ হবে। শুধু পরিবেশবিদেরাই নন, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারাও এই বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।