স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী

সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভারত সরকারের ওপর চাপ

একাত্তরে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন মঈদুল হাসান। পরবর্তীকালে তিনি লিখেছেন মূলধারা ’৭১ এবং উপধারা একাত্তর, মার্চ-এপ্রিল নামে দুটি বই। বিভিন্ন দেশে অবমুক্ত হওয়া মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র ঘেঁটে ও তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি লিখছেন আরও একটি বই। তাঁর প্রকাশিতব্য সেই বইয়ের দশম অধ্যায়ের প্রথম কিস্তি প্রকাশিত হলো আজ।

মঈদুল হাসান
মঈদুল হাসান

১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভার আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদ তাঁর অন্যতম প্রাথমিক কাজ হিসেবে নুরুল কাদেরকে জনপ্রশাসন সচিব হিসেবে নিয়োগ দান করেন। মধ্য-তিরিশের নুরুল কাদের ছিলেন পাবনা জেলার ডেপুটি কমিশনার (ডিসি)। ঢাকা শহরে পাকিস্তানি আক্রমণের খবর শোনা মাত্রই তিনি বিদ্রোহ করেন। তিনি পাবনা জেলা শহরকে মুক্ত করেন এবং পাবনা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে সর্বোচ্চ সময়—প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে দুঃসাহসিক প্রতিরোধ গড়ে তোলেন শুধু স্থানীয় সহায়তার ওপর নির্ভর করে। নুরুল কাদেরের বিরল কর্মকাণ্ডের কথা শুনে তাজউদ্দীন তাঁর ওপর প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক প্রশাসন গড়ে তোলার দায়িত্ব অর্পণ করেন। সরকারের বেসামরিক প্রশাসন কাঠামো গড়ে ওঠে দ্রুতই। কারণ, প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত আরও বেশ কয়েকজন বেসামরিক প্রশাসক আনুগত্য পরিবর্তন করে প্রবাসী সরকারের সঙ্গে যুক্ত হন।

যুদ্ধের শুরুতে মন্থর গতি

এই সময়ে সরকারের সামরিক প্রতিষ্ঠানও গড়ে ওঠে। পাকিস্তানি বিশ্বাসঘাতী আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট (ইবিআর) এবং ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের (ইপিআর) সঙ্গে যুক্ত বড়সংখ্যক বাঙালি সেনা কর্মকর্তা ও সেনারা বিদ্রোহ করা সত্ত্বেও আনুষ্ঠানিক যুদ্ধের গতি ছিল মন্থর। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে তাঁরা সবশেষ বুলেট পর্যন্ত প্রবল বিক্রমে লড়াই চালান। যদিও প্রতিরোধযোদ্ধারা কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পশ্চাদপসরণ করেন। তবে সে দেশের আইন অনুসারে ইবিআর, ইপিআর এবং সশস্ত্র পুলিশের সব বিদ্রোহী ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্রশস্ত্র হস্তান্তর করায় তাঁরা আর যোদ্ধা থাকতে পারেননি। তাঁদের বড় অংশই পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেয়, যেখানে ১৯৬৮ সাল থেকেই মাওবাদী সশস্ত্র নকশালপন্থী ও সরকারি সন্ত্রাসবিরোধী কেন্দ্রীয় রিজার্ভড পুলিশ বাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ চলছিল।

ওসমানী সমবেতদের উদ্দেশে বলেন, পাকিস্তান সামরিক আক্রমণ শুরু করার পরপরই পূর্ব পাকিস্তানে সেনা না পাঠিয়ে ভারত গোড়াতেই বাংলাদেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়েছে। তখন হাকসারও অকপটে বলেন, এই যদি বাংলাদেশ নেতাদের আশা থেকে ছিল, তাহলে এটাই বলা যায় যে তাঁরা ভুল আশাবাদ পোষণ করছিলেন। (পি এন হাকসারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৮২)।

এই চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে বিক্ষুব্ধ পূর্ব বাংলা থেকে নিজেদের ওপর কোনোরকম প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণবিহীন প্রায় ২০ হাজার সশস্ত্র প্রতিরোধযোদ্ধাদের ঢল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জন্য বড় রকমের নিরাপত্তা উদ্বেগ হয়ে দাঁড়ায়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জমা রাখা অস্ত্র ফেরত পেতে আশ্রয়প্রার্থী প্রতিরোধযোদ্ধাদের অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়। ফলে তাঁদের মধ্যে ধৈর্যচ্যুতি দেখা দিতে শুরু করে। অনেকে হয়ে ওঠে অসন্তুষ্ট। উপরন্তু প্রতিদিন ক্রমবর্ধমান হারে সীমান্ত পেরিয়ে আসা বিপুলসংখ্যক তরুণ অবিলম্বে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য, প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র পাওয়ার জন্য অধীর হয়ে পড়েন, যাতে তাঁরা দ্রুত ফিরে গিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে পারেন।

সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির চাপ

এই পরিস্থিতিতে সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য চাপ বাড়তে থাকায় প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিসভা ভারত সরকারকে অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে প্রতিরোধযোদ্ধাদের নিয়ে আসা চায়নিজ অস্ত্রশস্ত্র ফেরত দেওয়া হয় এবং এগুলোর জন্য গোলাগুলি, যা ভারতে তৈরি হয় না, তা-ও যেন সরবরাহ করা হয়। এর পাশাপাশি ভারতে প্রস্তুতকৃত অস্ত্রও যেন তাদের সরবরাহ করা হয়। সর্বোপরি বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ভারতকে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত নেয় প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিসভা। এই স্বীকৃতির ফলে লড়াইয়ের জন্য অন্য আরও সহানুভূতিশীল রাষ্ট্রের কাছে সাহায্য চাইতে তাদের সক্ষম করবে।

তদনুসারে, ৬ মে তারিখে পুরো বাংলাদেশ মন্ত্রিসভা নয়াদিল্লি উপস্থিত হয় এবং বাংলাদেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানায়। অবশ৵ এর আগে এপ্রিলের মাঝামাঝি, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠনের অব্যবহিত পর, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই নবীন রাষ্ট্রটিকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করেন এবং এই উদ্যোগের বাস্তবোপযোগিতা নিয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। তাঁদের অভিমত ছিল যে এ ধরনের স্বীকৃতির প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মানেকশ দৃঢ় অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত যেন বর্ষা মৌসুমের শেষ অবধি মুলতবি রাখা হয়, যাতে চলাচলের সুবিধা ছাড়াও যুদ্ধ জয়ের জন্য ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলো সুসংগঠিত ও পর্যাপ্ত অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হতে পারে। সেই বিবেচনা থেকে বাংলাদেশ মন্ত্রিসভার উত্থাপিত অনুরোধে অক্ষমতা প্রকাশ করা হয়। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দেন যে ভবিষ৵তে পাকিস্তানের সর্বাত্মক যুদ্ধের মুখোমুখি হওয়ার আগে ভারতের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির পাশাপাশি বাংলাদেশের নিজের সামরিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

এ সম্পর্কে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সচিব পি এন হাকসার ঘটনার ১১ বছর পর আমাকে বলেছিলেন, দুই পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির বিনিময় আসলে ততটা মসৃণ ছিল না। একজন সৎ, স্পষ্টভাষী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ বাহিনীর প্রধান কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম এ জি ওসমানী, বাংলাদেশ দলের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে মন্ত্রিসভার পক্ষে কথা বলছিলেন। হাকসার যেমনটা স্মরণ করেছিলেন—ওসমানী সমবেতদের উদ্দেশে বলেন, পাকিস্তান সামরিক আক্রমণ শুরু করার পরপরই পূর্ব পাকিস্তানে সেনা না পাঠিয়ে ভারত গোড়াতেই বাংলাদেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়েছে। তখন হাকসারও অকপটে বলেন, এই যদি বাংলাদেশ নেতাদের আশা থেকে ছিল, তাহলে এটাই বলা যায় যে তাঁরা ভুল আশাবাদ পোষণ করছিলেন। (পি এন হাকসারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৮২)।

ওসমানী আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর ১৯৩৯ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে অসামরিক অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। ব্রিটিশ ভারত ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ২৮ বছর কম৴রত থাকার পর ১৯৬৬ সালে তিনি পূর্ণ মর্যাদার কর্নেল হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে অবসর পান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৬৯ সালে জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ওসমানীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাধারণ সেনাদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা সম্পর্কে জানতে পেরে। তিনি ওসমানীকে আওয়ামী লীগে যুক্ত হতে রাজি করান এবং তাঁকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করে আনেন। ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারির গোড়ার দিকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানি সামরিক হস্তক্ষেপ সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান আশঙ্কার মুখে মুজিব ওসমানীকে পাকিস্তানি আক্রমণের জবাব দিতে ইবিআর ও ইপিআরের বাঙালি সদস্যদের নিয়ে একটি জাতীয়তাবাদী বাহিনী গড়ে তোলার সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বলেন। যেমনটা মনে হয়, এই কাজের প্রক্রিয়ায় ওসমানী ভারতীয় অস্ত্র, গোলাবারুদসহ অন্যান্য সাহায্য এবং সম্ভবত কিছুটা সরাসরি সহায়তার বিষয়ে মুজিবের আশাবাদ সম্পর্কে যা তিনি জানতে পেরেছিলেন, দিল্লিতে ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে খুব জোর দিয়ে তা-ই উল্লেখ করেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ। ১ এপ্রিল ১৯৭১। ছবি: আনন্দবাজার পত্রিকা

মন্ত্রিসভার সদস্যদের জন্য ধাক্কা

প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিসভার বেশির ভাগ সদস্য ওসমানীর অভিমতের সঙ্গে একমত ছিলেন। তাঁরা কোনো না কোনোভাবে জানতেন, ভারতের কাছে কী ধরনের সমর্থন আশা করা হয়েছিল, তবে কেন যে তা পাওয়া যায়নি, তা তাঁরা ভেবে কোনো হদিস পাননি। তাঁদের কাছে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ভারতের আপত্তি ছিল বিরাট একটা ধাক্কা। তাজউদ্দীন—যাকে শেখ মুজিব মার্চ মাসে অন্তত দুবার ঢাকার ভারতীয় উপহাইকমিশনারের কাছে বার্তা দিয়ে পাঠিয়েছিলেন এবং তিনি ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি, যিনি কিছুটা জানতেন যে তাঁর সহকর্মীরা যে রকম ধরে নিয়েছিলেন বিষয়টা আসলে সে রকম ছিল না।

১৭ মার্চ দ্বিতীয় দফা বৈঠকের সময় ভারতীয় উপহাইকমিশনার কে সি সেনগুপ্ত তাজউদ্দীনকে সম্ভাব্য পাকিস্তানি আক্রমণ বিষয়ে ভারতীয় উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারণী মহলে মতভিন্নতার কথা সম্পর্কে অবগত করেন। নির্ধারিত ২৪ মার্চ তারিখে তৃতীয় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়নি। তথাপি, পাঁচ দিন পর ভারতীয় সীমান্ত অভিমুখে যাওয়ার পথে তাজউদ্দীন কিঞ্চিৎ আশা পোষণ করছিলেন যে ভিন্ন কোনো চ্যানেলের মাধ্যমে হয়তো ভারতের সঙ্গে একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু সীমান্তে বিএসএফ কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপের পর তিনি সেই ধারণা বাতিল করেন, যখন তিনি জানতে পারেন যে তাদের সরকার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে কোনোরূপ সতর্ক পর্যন্ত করেনি যে সীমান্তের অপর পারে পূর্ব পাকিস্তানে ছোট বা বড় কোনো ঘটনা ঘটতে পারে এবং প্রতিরোধযোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহ করার কোনো ক্ষমতা তাঁদের দেওয়া হয়নি—এমনকি ছোটখাটো কোনো চালানও নয়।

শেখ মুজিব যদি ভারত সরকারের সঙ্গে কোনো ব৵বস্থা করেই থাকতেন, তাহলে তা তাজউদ্দীনকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের অন্য কোনো নেতার পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না। কিন্তু তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন, এখন পর্যন্ত যা কিছু ঘটেছে, ভারতের মাটিতে অবাধে প্রবেশের সুযোগ, বাসস্থান ও চলাফেরার মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধা, অবাধ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার মাধ্যমে প্রবাসী সরকার গঠনের সুযোগ এবং প্রতিরোধযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয় ও লড়াই করার বাহিনী হিসেবে তাঁদের অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতি—এসব কিছুই করা হচ্ছে ভারত সরকারের সঙ্গে তাঁদের নেতা কর্তৃক আয়োজিত ‘ব্যবস্থার’ কারণেই। কাজেই ইন্দিরা গান্ধী যখন বললেন যে পরবর্তী মাস থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী বর্ধিত সংখ্যায়—এপ্রিলে করা মুক্তিবাহিনীর (এফএফ) ২ হাজার সদস্যের প্রশিক্ষণের প্রতিশ্রুতি এক লাফে বাড়িয়ে জুন থেকে ৫ হাজার করবে, তখন বাংলাদেশ মন্ত্রিসভার সদস্যদের কাছে তা তেমন বিরাট কিছু বলে মনে হয়নি।

এমনকি প্রতিরোধযোদ্ধাদের চায়নিজ অস্ত্রের জন্য গোলাগুলি উৎপাদন করার প্রতিশ্রুতিও তাঁদের মনে খুব একটা রেখাপাত করেনি। কারণ, নতুন অস্ত্র সরবরাহের অনুরোধের জবাবে ইন্দিরা গান্ধী ভারতীয় অস্ত্র দেওয়ার পথে তাঁর অসুবিধা ব্যাখ্যা করে বলেন, গেরিলা যুদ্ধে ‘ড্রপ রেট’ সব৴দাই বেশি। কোনো সদস্যরাষ্ট্রের বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে অস্ত্র দেওয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের কঠোর নীতি ভারতকে মেনে চলতে হবে। তবে আমদানিকৃত বিদেশি রাষ্ট্রের ছাপযুক্ত অস্ত্র সরবরাহ করার ব্যাপারে সমঝোতা তৈরি হয়, কিন্তু এটাও বোঝা গিয়েছিল যে উচ্চমূল্যের কারণে তা হবে খুবই সীমিত মাত্রায়। (চলবে)