প্রথম আলোর ১৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার সাভারে ইজিবাইকের যন্ত্রের সঙ্গে গলায় থাকা ওড়না বা চাদর পেঁচিয়ে ঘটা দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়েছেন সাভার বন্ধুসভার সদস্যরা।
সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রের (সিআরপি) সহায়তায় নামাবাজার এলাকায় সাভার বন্ধুসভার সদস্যরা শতাধিক ইজিবাইকে কাঠ বেঁধে যাত্রী ও চালকদের মধ্যে সচেতনতামূলক এই প্রচারণা চালায়।
ইজিবাইকের চালকের পেছনের দুই আসনের মাঝের অংশ ফাঁকা। এই ফাঁকা অংশ দিয়ে ওড়না বা চাদর ঢুকে ইঞ্জিনের সঙ্গে আটকে যাত্রীরা মেরুদণ্ডে আঘাত ডান। এতে অনেকের মৃত্যু বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারেন। এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে বন্ধুসভার সদস্যরা নামাবাজার থেকে সাভার বাজার রোডসহ বিভিন্ন সড়কে চলাচল করা ইজিবাইকের চালক ও যাত্রীদের সচেতন করতে প্রচারপত্র বিতরণ করেন। দুর্ঘটনা রোধে অন্তত ১২০টি ইজিবাইকে কাঠ বেঁধে দেওয়ায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিআরপির অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড নেটওয়ার্কিং কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন, সিবিআর কর্মী আসাদুজ্জামান, সাভার বন্ধুসভার সভাপতি স্মরণ সাহা ও সাধারণ সম্পাদক প্রবীর ঘোষ।
ইজিবাইকের চালক শামীম হোসেন বলেন, ‘মাস খানেক আগে আমার বাইকের পেছনের সিটে (আসন) বসা এক মহিলা যাত্রীর গলায় থাকা ওড়না প্যাঁচানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি চিৎকার দেন। চিৎকার শুইনা বাইক বন্ধ কইরা দেহি হ্যা অজ্ঞান অইয়া গ্যাছে। আগে থেকে কাঠ বাঁধা থাকলে আর এই অবস্থা হইতো না।’
চালক আরফান আলী বলেন, ‘প্রথম আলোর কারণে ইজিবাইকের যন্ত্রের সঙ্গে গলার ওড়না বা চাদর পেঁচিয়ে ঘটা দুর্ঘটনার সম্পর্কে জানলাম। একটি কাঠও বেঁধে দেওয়া হলো আমার বাইকে। পর্যায়ক্রমে সব ইজিবাইকে যাতে কাঠ ব্যবহার করা হয় সেই উদ্যোগ নিতে হবে।’
সিআরপির অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড নেটওয়ার্কিং কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত ইজিবাইকের যন্ত্রের সঙ্গে গলায় থাকা ওড়না বা চাদর পেঁচিয়ে আঘাত পাওয়া ৪৭ জন রোগী সিআরপিতে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। আর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর মারা গেছেন চারজন।
পাঠক মেলা
বিকেলে অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় পাঠক মেলার। দেড় শতাধিক পাঠকসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন। বন্ধুসভার সদস্যদের অংশগ্রহণে বিকেল চারটায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এর পর নাচ ও গানের ফাঁকে ফাঁকে চলে পাঠক ও অতিথিদের বক্তব্য। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সাভার বন্ধুসভার সভাপতি স্মরণ সাহা।
পাঠক মেলায় কবিতা আবৃত্তি করেন বন্ধুসভার উপদেষ্টা আবদুল কাদের তালুকদার। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা। এতে বক্তব্য দেন অধর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন পিটার গোমেজ ও প্রথম আলোর পাঠক এবং মহিলা পরিষদ সাভার শাখার সভাপতি পারভিন ইসলাম।
রতন পিটার গোমেজ বলেন, ‘ভালো কাজের মধ্য দিয়ে সমাজকে আলোকিত করার জন্যই প্রথম আলো। এ কারণেই প্রথম আলো সমাজে অবস্থান করে নিতে পেরেছে।’
পারভিন ইসলাম বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়েই প্রথম আলো আজ প্রথম হয়েছে। এ ছাড়া প্রথম আলো বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে। যেখানেই দুর্যোগ সেখানেই প্রথম আলো।
এ আগে সংগীত পরিবেশন করেন বন্ধুসভার সদস্য সচিন সরকার, তালাত মাহমুদ, আজমীরা খান ও তীমির রায়। সব শেষে নৃত্য পরিবেশন করেন বন্ধু বিপাশা সাহা ও রফিকুল ইসলাম।