তারুণ্য

সাবিরুলের বাংলাদেশ

সাবিরুল ইসলাম
সাবিরুল ইসলাম

যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন এমন ১০০ প্রভাবশালী ব্রিটিশ বাংলাদেশি ব্যক্তির নাম প্রকাশ করে আসছে ব্রিটিশ বাংলাদেশি পাওয়ার হানড্রেড (বিবিপাওয়ার হানড্রেড) নামের একটি সংস্থা। গত বছর ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবন হাউস অব কমনসের মিলনায়তনে এক সন্ধ্যায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তেরেসা মে ঘোষণা করছিলেন তালিকায় স্থান পাওয়া ব্যক্তিদের নাম। প্রজেক্টরে ভেসে ওঠা নামের তরুণটিই আমার পাশে দাঁড়ানো—সাবিরুল! সেই সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে খুব একটা কথা হয়নি। শুধু অভিনন্দন জানানো—এইটুকুই। ওই সন্ধ্যা থেকে ফিরেই সাবিরুলকে জানার চেষ্টার শুরু। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তাঁর ঝুলিতে জমা পড়েছে অনেকগুলো পুরস্কার ও স্বীকৃতি। এ বিষয়ে ‘ছুটির দিনে’ ও ‘স্বপ্ন নিয়ে’তে বিস্তারিত লেখা হয়েছে।
সাবিরুলের মুঠোফোনে বার কয়েক চেষ্টা করেও কাজ হলো না। খুদে বার্তা দিয়ে রাখলাম। দুই দিন পর আমাদের কথা হয়। প্রথম আলো সম্পর্কে তাঁর অল্পবিস্তর জানা আছে বাংলাদেশে পরিচিতজনদের কাছ থেকে। বাংলাদেশের কেউ তাঁর সম্পর্কে জানতে চাচ্ছে জেনে সাবিরুল উজ্জীবিত। ফোনে সাবিরুল বলছিলেন, ‘আমি বাংলাদেশে যেতে চাই, কিন্তু পূর্বপুরুষের দেশে যাওয়াটাই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি কঠিন লাগছে!’ জানিয়ে রাখি, সাবিরুল যুক্তরাজ্যেই জন্মেছেন, তিন বছর বয়সে একবার এসেছিলেন বাংলাদেশে।
দুই দিন পর কার স্ট্রিটে সাবিরুলের সাক্ষাৎকার নেওয়ার দিন ঠিক হলো। ২১ জুন ২০১৩। এসেই সাবিরুল অনর্গল বলে যাচ্ছেন তাঁর বেড়ে ওঠার গল্প। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে কথা শুনছি পৃথিবী-কাঁপানো এই তরুণের গল্প। সেদিনের পর থেকে সাবিরুলের সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে যোগাযোগ হয়। কয়েক দিন পর সাবিরুল বলছিলেন, বাংলাদেশে তাঁর সফরের আয়োজন করেছে জেসিআই। ৬ সেপ্টেম্বর সাবিরুলকে জানাই, পরদিন শনিবার ‘ছুটির দিনে’ ম্যাগাজিনে তাঁকে নিয়ে মূল ফিচার হচ্ছে। ৭ সেপ্টেম্বর রাতে সাবিরুলের খুদে বার্তাটি আমাকে খুবই আনন্দ দেয়। সাবিরুল লিখেছেন, ‘অবিশ্বাস্য! রোমাঞ্চিত! আমার কল্পনার বাইরে সবকিছু ঘটছে আজ সারা দিন। প্রথম আলোকে বিনম্র কৃতজ্ঞতা জানাই আমাকে সুযোগ দেওয়ার জন্য। লেখা ছাপা হওয়ার পর ফেসবুকে প্রায় চার হাজার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পেয়েছি!’

এরপর সাবিরুল বাংলাদেশে আসেন। ২৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে সাবিরুলের বক্তৃতামালা শুরু হয়। বাংলাদেশে ‘ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন’ ক্যাম্পেইনের শেষ অনুষ্ঠানটি প্রথম আলোতেই হলো। বাংলাদেশ ছাড়ার আগের রাতে ফেসবুকে সাবিরুল বলছিলেন, ‘প্রথম আলো আমার সফরে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।’ জানালেন, প্রথম আলো তাঁকে নিয়মিত কলাম লেখার সুযোগ করে দিয়েছে।

উজ্জ্বল দাশ: লন্ডন প্রদায়ক