তিন বছর আগে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় করা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে ৮ আসামির মধ্যে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বিচার শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় আজ বুধবার বহুল আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করলেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।
ফাঁসির দণ্ড পাওয়া সাত আসামি হলেন রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান ওরফে রাফিউল ইসলাম, রাজীব গান্ধী ওরফে জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মোহাম্মদ হাদিসুর রহমান সাগর ওরফে সাগর, মামুনুর রশিদ রিপন, শরিফুল ইসলাম খালেদ। আর খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।
২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়ংকর জঙ্গি হামলা স্তম্ভিত করেছিল পুরো বাংলাদেশকে।
২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই হামলা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। গত এক বছরে রাষ্ট্রপক্ষ এই হামলা মামলায় ১১৩ জন সাক্ষী হাজির করেছে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নিহত পুলিশ সদস্যদের স্বজন, হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে আহত পুলিশ, হোলি আর্টিজান বেকারির মালিক ও কর্মী, জিম্মি হয়ে পড়া অতিথি এবং যেসব বাড়িতে আস্তানা গেড়ে নৃশংস এই হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, সেসব বাড়ির মালিকেরা।
২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে ভয়াবহ ওই হামলার ঘটনা স্তম্ভিত করেছিল পুরো বাংলাদেশকে। একই সঙ্গে স্পষ্ট হয়েছিল জঙ্গিবাদের বিস্তারের এক বিপজ্জনক মাত্রা।
জঙ্গিরা হত্যা করেছিলেন ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে, যাঁদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয় ও ৩ জন বাংলাদেশি।
পুলিশের তদন্তে এসেছে, এই হামলায় জড়িত গোষ্ঠীর নাম নব্য জেএমবি, যারা ঘটনার পর নিজেদের আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট) বলে দাবি করেছিল।
ওই ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একের পর এক অভিযান চালিয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়, ভেঙে দিয়েছে জঙ্গিদের অনেক আস্তানা। এসব অভিযানে নিহত হয়েছেন হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরীসহ জড়িত গুরুত্বপূর্ণ আট জঙ্গি। আক্রমণকারী পাঁচজন নিহত হন ঘটনার পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে। এ ঘটনায় জড়িত জীবিত থাকা আট জঙ্গি কারাগারে আছেন। তাঁদের বিচারের রায় ঘোষণা হলো আজ।