সিলেটের বিছনাকান্দির হাওর এলাকার ফসলি জমিতে যন্ত্র দিয়ে পাথর তোলায় টাস্কফোর্স অভিযান চালিয়ে ২৫টি যন্ত্র জব্দ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে। আজ বুধবার গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুস সাকিবের নেতৃত্বে টানা সাত ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে যন্ত্রগুলো ধ্বংস করা হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বিছনাকান্দি এলাকায় পাথর কোয়ারি চিহ্নিত এলাকার বাইরে একশ্রেণির পাথর কারবারি যন্ত্র দিয়ে পাথর উত্তোলন করছিল। হাওরের ফসলি জমি এলাকায় গর্ত খুঁড়ে যন্ত্র দিয়ে এসব পাথর তোলা হচ্ছিল। যন্ত্র দিয়ে পাথর তোলা নিষিদ্ধ। পাথর কোয়ারি হিসেবে চিহ্নিত এলাকার বাইরে থেকে পাথর তোলাও আইনত নিষিদ্ধ। একসঙ্গে দুটো নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করায় আজ সকাল সাড়ে ১০টায় টাস্কফোর্সের অভিযান শুরু হয়, যা চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যসহ পুলিশের সমন্বয়ে বিছনাকান্দি ও মরকিটিলা এলাকায় টাস্কফোর্সের অভিযান হয়। এ দুটি এলাকার পাশে বগাইয়া হাওর এলাকায় গর্ত খুঁড়ে যন্ত্র দিয়ে পাথর তোলায় ২৫টি যন্ত্র জব্দ করা হয়। অভিযান চলাকালে যন্ত্রগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী বিছনাকান্দির মূল পরিচিতি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে। সেখানে পাথর কোয়ারি চিহ্নিত এলাকায় ‘বোমা মেশিন’ ও ‘শ্যালোমেশিন’ দিয়ে পাথর তোলায় পর্যটন ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় উপজেলা প্রশাসন যন্ত্র দিয়ে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে। এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পাথর উত্তোলন করে একটি চক্র। এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি টাস্কফোর্সের অভিযানে ১৫টি যন্ত্র জব্দ করে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছিল।
অভিযান শেষে ইউএনও নাজমুস সাকিব প্রথম আলোকে বলেন, পাথর কোয়ারি চিহ্নিত এলাকায় যন্ত্র দিয়ে পাথর তোলা নিষিদ্ধ। এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কোয়ারির বাইরে হাওরের ফসলি জমি খুঁড়ে পাথর তোলা হচ্ছিল। এ অভিযানে যন্ত্র ধ্বংস করার পাশাপাশি পাথর উত্তোলন খোঁড়া গর্ত ভরাট করা হয়েছে।
ইউএনও জানান, বিছনাকান্দির মূল পরিচিতি পর্যটনকেন্দ্র এবং এই পর্যটনের উৎস হচ্ছে এলাকার পরিবেশ ও প্রকৃতি। পর্যটনের উন্নয়নে নানা প্রকল্প চলমান অবস্থায় পাথর কোয়ারিতে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর তুলতে দেওয়া হচ্ছে। কোনোভাবে যন্ত্র দিয়ে পাথর তুলতে দেওয়া হবে না।
এর আগে বন্ধঘোষিত পাথর কোয়ারিতে গত সোমবার যন্ত্র দিয়ে পাথর তোলায় জাফলংয়ে একজনকে সাত দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গোয়াইনঘাটের ইউএনও মো. নাজমুস সাকিব এই দণ্ড দেন। জাফলংয়ের পিয়াইন নদে শ্যালোযন্ত্র দিয়ে পাথর উত্তোলন করছিলেন ছমরু মিয়া নামের এক ব্যক্তি। অবৈধভাবে পাথর তোলায় তাঁর যন্ত্র জব্দ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাত দিনের কারাদণ্ড দেন। ছমরু মিয়ার বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায়।