৬৪ জেলাকে পাখির চোখ করেছিলেন স্নাতকের ছাত্র তাম্মাত বিন খয়ের। এই ৬৪ জেলায় আগেও তিনি দ্বিচক্রযানে ঘুরেছেন। তখন সময় লেগেছিল ২৫ দিন। এবার ১৫ দিনে সবগুলো জেলা ঘুরে আসলেন তাম্মাত। তাঁকে মোট পাড়ি দিতে হয় ৩ হাজার ৯৭০ কিলোমিটার।
৮ নভেম্বর রাত ৯টা ১৮ মিনিটে শেষ জেলা হিসেবে কক্সবাজারে পা রেখে তাম্মাত এই বিজয়বার্তা ঘোষণা করেন। তখন স্টপ ওয়াচে মোট সময় দেখায় ১৪ দিন ২০ ঘণ্টা ২৩ মিনিট। এর আগে ২৫ অক্টোবর রাত পৌনে একটায় চট্টগ্রাম থেকে সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণে বের হন তিনি।
কক্সবাজার থেকে তাম্মাত চট্টগ্রাম ফেরেন ৯ নভেম্বর রাতে। তাঁকে নগরের সিআরবি মোড়ে সাইক্লিস্টরা ছোট সংবর্ধনা দেন।
তাম্মাতের এবার সচেতনতামূলক প্রচারণার বিষয় ছিল, বিভিন্ন জেলার বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রীদের জন্য জরুরি স্যানিটারি ন্যাপকিন বাক্স রাখা। তবে এ ব্যাপারে কোনো স্পন্সর তিনি পাননি। তারপরও অনলাইনে এই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন চট্টগ্রামের ২০টি বিদ্যালয়ে প্রাথমিকভাবে জরুরি স্যানিটারি ন্যাপকিন বাক্স স্থাপনের বিষয়ে প্রচারণায় নামবেন তিনি।
তাম্মাত বিন খয়ের প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবার ১৫ দিনের লক্ষ্য নিয়ে বের হয়েছিলাম। অনেক প্রতিকূলতা ছিল। তারপরও লক্ষ্য অনুযায়ী সম্পন্ন করেছি। এটা অনেক আনন্দের।’
ছোটবেলা থেকেই সাইকেল চালানোর শখ। এর সঙ্গে যোগ হয় ভ্রমণের নেশা। একসময় এই দ্বিচক্রযানে চড়ে ভ্রমণের ইচ্ছে পেয়ে বসে তাম্মাতকে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে ২৫ দিনে পুরো দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে তাম্মাত এবার আবারও সাইকেলের প্যাডেলে পা রাখেন।
তবে এবার ভালোমন্দ নানা অভিজ্ঞতাও ছিল তাম্মাতের ঝুলিতে। প্রতি জেলা সদরে সার্কিট হাউসের সামনে গিয়ে ফেসবুক লাইভ করেছেন তাম্মাত। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই সাইক্লিস্ট বন্ধু। তাঁরা ছিলেন একটি মোটরসাইকেলে। তাম্মাতের শুশ্রূষা খাওয়াদাওয়া সবকিছু এই দুজন দেখাশোনা করেছেন। তাঁরা হলেন নাজিউর রহমান এবং মজিবুর রহমান।
তাম্মাত বলেন, ‘চালানোর সময়ও দুই বন্ধু বাইক থেকে লাইভ করতেন। সিলেট থেকে সুনামগঞ্জ যাওয়ার পথে বৃষ্টির কবলে পড়ি। তখন এক আসবাবের দোকানের মালিক তাঁর দোকানে আমাদের থাকতে দেন। এ রকম অনেক মানুষের ভালোবাসা পথে পথে পেয়েছি। তবে সরকারি দপ্তরগুলোর আরও একটু সহযোগিতা পেলে ভালো লাগত।’
তাম্মাত বিন খয়ের চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের গণিত বিষয়ে স্নাতক পড়ছেন। বাড়ি গোপালগঞ্জ হলেও জন্ম চট্টগ্রামে। বাবা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেয়ামত আলী সিকদার পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামে থাকেন। ছয় ভাই এক বোনের মধ্যে তাম্মাত সবার ছোট।