নিখোঁজ সাংবাদিক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে হওয়া দুই মামলা দায়েরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। একই সঙ্গে অ্যামনেস্টি শফিকুলের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য জরুরি তদন্ত শুরু করতে ও সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায়। আজ বুধবার সংগঠনটি এক বিবৃতিতে এসব কথা জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৯ মার্চ রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে শফিকুলসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলাটি করেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাংসদ সাইফুজ্জামান শিখর। এর পরদিন ১০ মার্চ নিখোঁজ হন শফিকুল। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টা ৫১ মিনিটে সিসিটিভি ফুটেজে শফিকুলকে তাঁর পত্রিকা অফিস থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলে উঠতে দেখা যায়। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ। এর তিন ঘণ্টার মাথায় ওই দিন রাত ১০ টা ১০ মিনিটে শফিকুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দ্বিতীয় মামলাটি করেন আওয়ামী লীগের আরেক নেতা।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিক শফিকুলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলাটি করেন আওয়ামী লীগের সদস্য উসমিন আরা বেলি। তিনি রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় মামলাটি করেন। তিনি শফিকুলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অসত্য তথ্য প্রকাশ ও মানহানির অভিযোগ আনেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৬ ও ২৯ নম্বর ধারার আওতায় মামলাটি করেন।
সাংবাদিক শফিকুল ২০ দিনের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ। এ ব্যাপারেও উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক এই সংগঠন।
শফিকুল ইসলামের ছেলে মনোরম অ্যামনেস্টিকে বলেন, যখন সবাই করোনাভাইরাস নিয়ে (কোভিড-১৯) উদ্বিগ্ন, তখন তাঁর পরিবার শফিকুলের নিখোঁজে উদ্বিগ্ন। তাঁরা কেউই এ বিষয়ে কিছু আঁচ করতে পারছেন না। তিনি বলেন, কাউকে যেন তাঁদের মতো এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে বাঁচতে না হয়।
দ্বিতীয় মামলার প্রতিক্রিয়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি বলেছেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই শফিকুল অবস্থান নির্ণয়ের জন্য জরুরি তদন্ত শুরু করতে হবে। তিনি যদি রাষ্ট্রীয় কোনো সংস্থার হেফাজতে থাকেন তবে তাঁকে মুক্তি দিতে হবে, তাঁর বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
আরও পড়ুন:
সাংবাদিক শফিকুলকে ফেরত চায় পরিবার