সরকারি সৌরবিদ্যুৎ প্রথম যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভেতরে স্থাপিত ৭ দশমিক ৪ মেগাওয়াটের নতুন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র। সারি সারি সৌর প্যানেলের ছবিটি গত রোববারের। ছবি: সৌরভ দাশ
রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভেতরে স্থাপিত ৭ দশমিক ৪  মেগাওয়াটের নতুন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র। সারি সারি সৌর প্যানেলের ছবিটি গত রোববারের।   ছবি: সৌরভ দাশ

কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের বাঁধ বিভক্ত করেছে কর্ণফুলীকে। ওপরের অর্থাৎ উজানের অংশটি এখন হ্রদ। নিচের দিকে বহমান কর্ণফুলী। বাঁধের ওপর দাঁড়ালে উত্তরে হ্রদের বিশাল জলরাশি। দক্ষিণে কর্ণফুলীর স্রোতোধারা। তার আগে বাঁধ–লাগোয়া নদীতীরে বসেছে সারি সারি সৌর প্যানেল, রোদ পড়ে চিক চিক করছে। এই সৌর প্যানেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

সরকারিভাবে স্থাপিত সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যুক্ত হওয়ার ঘটনা দেশে এটা প্রথম। আগামীকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কাপ্তাইয়ের এই সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন। এর নাম ‘কাপ্তাই ৭.৪ মেগাওয়াট সোলার পিডি গ্রিড কানেকটেড বিদ্যুৎকেন্দ্র।’

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতরে বাঁধের পাশে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এই সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের অবস্থান। এশীয় উন্নয়ন বোর্ডের আর্থিক সহযোগিতায় প্রায় সাড়ে ৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মূল ঠিকাদার চীনের জেডটিই করপোরেশন। ২০১৭ সালের ৯ জুলাই এটি নির্মাণের চুক্তি হয়। পানিবিদ্যুতের প্রায় সাড়ে ১৯ একর জমিতে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়।

কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী এ টি এম আবদুজ্জাহের প্রথম আলোকে বলেন, সরকারিভাবে এটি প্রথম সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র, যেখান থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। মে মাস থেকে এটি পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে। সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে যদি এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎও উৎপাদন করা যায়, তা–ও ভালো, পরিবেশসম্মত। এতে খরচ কম পড়বে।

প্রথম দুই বছর এর সার্বিক দায়িত্ব থাকবে জেডটিইর কাছে। এর পর তা পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

গত রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, এখানে মোট প্যানেল রয়েছে ২৪ হাজার ১২টি। ইনভার্টার রয়েছে ২৪০টি। সর্বোচ্চ পাওয়া গেছে ৬ দশমিক ৫ মেগাওয়াট।

অপারেশনের দায়িত্বে নিয়োজিত জেডটিইর প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সৌর প্যানেলগুলোর মেয়াদ ২৫ বছর। আর ইনভার্টারের ১০ বছর ওয়ারেন্টি। এরপর পরিবর্তন করে উৎপাদন চালিয়ে নেওয়া যাবে। এখন আবহাওয়া অনুযায়ী উৎপাদন কমবেশি হচ্ছে।

এই কেন্দ্রের প্রথম দিকের কারিগরি পরামর্শক ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সরকারিভাবে এটি প্রথম সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র। এর প্যানেলগুলো বসানো হয়েছে পূর্ব ও পশ্চিমমুখী। এর ফলে জায়গা কম লেগেছে। পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহার করে বছরে এক কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব এই কেন্দ্র থেকে।