এক কিশোরকে সমকামিতায় বাধ্য করায় রাজশাহীর পুঠিয়ার শ্রমিকনেতা নুরুল ইসলাম (৫৪) খুন হন। ১৬ বছর বয়সী ওই কিশোর গত সোমবার বিকেলে বিচারিক হাকিম আরিফুল ইসলামের আদালতে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। এদিকে এ ঘটনার সাক্ষী হিসেবে আরও তিনজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের একটি ইটভাটা থেকে ১১ জুন সকালে নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নুরুল ইসলাম উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ধোপাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি উপজেলা সড়ক পরিবহন ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই সংগঠনের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি পরাজিত হন। শ্রমিক ইউনিয়নের দ্বন্দ্বের কারণে তিনি খুন হন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, ওই কিশোরকে সমকামিতায় বাধ্য করায় এ শ্রমিকনেতা খুন হন। গত সোমবার বিকেলে ওই কিশোর আদালতে জবানবন্দি দেয়। তার জবানবন্দি ধারণের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা ইফতেখায়ের আলম জানান, নুরুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় তাঁর মেয়ে বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়। তদন্তের একপর্যায়ে রোববার নুরুল ইসলামের পরিচিত ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে সব স্বীকার করে।
ওই কিশোর জবানবন্দিতে বলেছে, নূরুল ইসলামকে সে নানা বলে ডাকত। কিন্তু নুরুল ইসলামের সমকামিতার বদঅভ্যাস ছিল। তিনি ওই এলাকার বিভিন্নজনকে এ কাজে ব্যবহার করতেন। সেও নুরুলের ফাঁদে পড়ে। এ জন্য নুরুল ইসলাম টাকাও খরচ করতেন। কিন্তু কিশোরটি এতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন শ্রমিকনেতা। ফলে ওই কিশোর বাধ্য হতো নুরুল ইসলামের চাহিদা মেটাতে।
১০ জুন রাতেও নুরুল ইসলাম ওই কিশোরকে ইটভাটায় নিয়ে যান। সমকামিতার একপর্যায়ে নুরুল ইসলাম মাটিতে পড়ে যান। তখন সুযোগ পেয়ে ওই কিশোর তাঁর গলা টিপে ধরে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই নুরুলের মৃত্যু হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ওই কিশোর একাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আদালতে সে এ কথা জানিয়েছে। শিগগিরই আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।