সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সনাতনী ওষুধের নিরাপদ ব্যবহার বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ–পূর্ব এশীয় অঞ্চল। আজ বৃহস্পতিবার আঞ্চলিক কমিটির ৬৭তম সম্মেলনের তৃতীয় দিন আলোচকেরা এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
আঞ্চলিক কমিটি ডব্লিউএইচওর সনাতনী ওষুধ কৌশল ২০১৪-২০২৩ পর্যালোচনা করে। সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার কাজে প্রচলিত সনাতনী ওষুধ কাঠামোকে কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায়, এ ব্যাপারে আলোচনা করেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, সনাতনী পদ্ধতির চিকিৎসকেরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের কোটি মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন। মানুষ যেন নিরাপদে ও সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্মত সনাতনী ওষুধ পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য কঠোর মাননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু থাকতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
দক্ষিণ–পূর্ব এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে ‘আয়ুর্বেদ’ ও ‘ইউনানি’; ভারতে ‘আয়ুষ’ (আয়ুর্বেদ, ইয়োগা, ইউনানি, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথি); ভুটানে ‘সোয়া রিগপা’; ইন্দোনেশিয়ায় ‘জামু’; গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়ায় ‘কোরিয়ো’; মিয়ানমারে ‘দেসানা’ ‘ভেসিজ্জা’ ‘নেটখাট্টা’ এবং ‘ভিজ্জাধারা’; নেপালে ‘আয়ুর্বেদ’, ‘ইউনানি’ ও ‘আমচি’ এবং শ্রীলঙ্কায় ‘দেশীয়া চিকিৎসা’ ও ‘সিদ্ধা’ প্রচলিত রয়েছে। এ ছাড়া অনেক দেশেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা হয়ে থাকে।
ডব্লিউএইচও বলছে, মানসম্মত সনাতনী ওষুধের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে তথ্য আদান-প্রদানের সুযোগ বাড়ানো এবং নীতিমালা ও বিধান তৈরিতে সদস্য দেশগুলোকে সহযোগিতার ধারা সংস্থাটি অব্যাহত রাখবে। ডব্লিউএইচওর সহযোগিতায় অঞ্চলের ১১টি দেশের মধ্যে ১০টি দেশে সনাতনী ওষুধের জাতীয় নীতিমালা হয়েছে, ছয়টি দেশে সনাতনী পদ্ধতির চিকিৎসকদের জন্য বিধান চালু আছে এবং নয়টি দেশে সনাতনী ওষুধের ওপর উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে।
সনাতনী ওষুধের চাহিদা পূরণের জন্য এবং এর মান, নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতাকে আরও উন্নত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘সনাতনী ওষুধ কৌশল: ২০১৪-২০২৩’ প্রণয়ন করেছে। এ কৌশলের তিনটি মূল লক্ষ্য হলো—একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়া এবং জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা; বিধান তৈরির মাধ্যমে সনাতনী ওষুধের নিরাপত্তা, গুণমান ও কার্যকারিতাকে আরও জোরদার করা এবং সনাতনী চিকিৎসাপদ্ধতি ও স্বচিকিৎসা সেবাকে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় যথাযথভাবে অঙ্গীভূত করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ১১টি সদস্য রাষ্ট্র হলো—বাংলাদেশ, ভুটান, গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও পূর্ব তিমুর।