একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভারত, নেপাল, সার্ক ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) নির্বাচনী পর্যবেক্ষকেরা। তাঁদের মতে, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে ভোট শেষ হয়েছে।
ভারতের তিন সদস্যের নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের অন্যতম সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গের প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা আরিজ আফতাব গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই নির্বাচন সুশৃঙ্খল ও পরিশিলীতভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছে। নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ আমাদের চোখে পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের নির্বাচন কমিশনের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সে কারণেই তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এসেছে।
ভারতীয় পর্যবেক্ষক দলের পর একই হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে ওআইসির প্রতিনিধিদলটি। সাত সদস্যের প্রতিনিধিদলটির নেতা হামিদ এ ওপেলোইয়েরু বলেন, ‘আমরা রাজধানীর ওয়ারী, মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখার সময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ততা দেখে আমরা সন্তুষ্ট।’
নির্বাচনে প্রাণহানির বিষয়ে জানতে চাইলে ওআইসির সহকারী মহাসচিব হামিদ ওপেলোইয়েরু বলেন, ওই ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা যায়। যদিও একটি মৃত্যু কারও কাম্য হতে পারে না। হতাহতের ঘটনাগুলোকে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবে বলতে পারেন।
নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওআইসির নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের এই সদস্য বলেন, নির্বাচনী কর্মকর্তার সময়মতো ও সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করছেন, ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দেওয়ার মতো দায়িত্ব পালন করেছেন। আন্তর্জাতিক এসব মান পূরণ করার মানে হচ্ছে নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখার সময় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে দেখেছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে সন্ধ্যায় নেপালের দুই সদস্যের নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের নেতা দিপেন্দ্র কান্ডাল সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তাঁরা ঢাকা-৬ ও ঢাকা-১৩ আসনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। ইভিএম প্রযুক্তি নিয়ে তাঁদের আগ্রহ ছিল। বাংলাদেশ নিজস্ব প্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ভোট–প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পেরেছে। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু ও পরিচ্ছন্ন ছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এর আগে গতকাল সকালে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে স্থাপিত ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের পর নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে সন্তুষ্টির কথা জানান কানাডার নাগরিক তানিয়া ফস্টার। সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি হিসেবে তানিয়া ফস্টারসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিক ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন।
তানিয়া ফস্টার বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমি পাঁচটি ভোটকেন্দ্র ঘুরেছি। বাংলাদেশের এ নির্বাচনের সাক্ষী হতে পেরে আমি গর্বিত। প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটারদের অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ভোট প্রয়োগ করতে দেখেছি। এটা আমাকে সত্যি অনুপ্রাণিত করেছে।’