সন্তানকে লুকিয়ে গৃহকর্তা–গৃহকর্ত্রীর কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা আদায়  

শিশু গৃহকর্মী ইমুনাকে সাড়ে তিন বছর লুকিয়ে রেখেছিল তার পরিবার। এভাবে লুকিয়ে রেখে এক দম্পতিকে মানব পাচারের মামলায় ফাঁসিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে আসছিলেন শিশুটির বাবা। ‘নিখোঁজ’ হওয়ার সাড়ে তিন বছর পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এই প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন করেছে। এরপর শিশু ইমুনাকে (১১) শেরপুরে গজনি এলাকায় তার দাদির কাছ থেকে গত সোমবার উদ্ধার করে।

পিবিআই জানায়, ২০১৮ সালে আট বছর বয়সী শিশু ইমুনাকে রাজধানীর বনশ্রীর ২ নম্বর সড়কসংলগ্ন ব্যাংক কর্মকর্তা সায়েদুর রহমানের বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দেওয়া হয়। ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাসা থেকে বের হওয়ার পর শিশুটি নিখোঁজ হয়। চার মাস পর জুন মাসে ইমুনার বাবা নুরুল হক সায়েদুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীকে আসামি করে ঢাকার আদালতে মানব পাচার আইনে মামলা করেন। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইমুনার বাবা নুরুল হক একজন শ্রমিক। তিনি সপরিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে থাকেন। মামলাটি তদন্তের জন্য খিলগাঁও থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত। তারা তদন্তে শিশুটির কোনো সন্ধান না পেয়ে ২০২০ সালের ৩০ জুলাই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এরপর বাদীর নারাজির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত বছরের ২৯ নভেম্বর মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানজিনা আক্তার আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে শিশুটিকে শনাক্ত ও পরে উদ্ধার করা হয়। ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে শিশুটিকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। এই তিন বছরে ইমুনার পরিবার ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রায় পাঁচ-ছয় লাখ নিয়েছে। মামলা হওয়ার পরই ব্যাংক কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রী আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, শিশুটির দাদি ঢাকার একটি বাসায় কাজ করতেন। এ ঘটনায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মামলার বাদী শিশুটির বাবাও পুরো বিষয়টি অবগত ছিলেন।

তানজিনা আক্তার বলেন, শিগগিরই ব্যাংক কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। শিশুটিকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।