বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ জে এম মাসুদুর রহমানের অপসারণের দাবিতে গতকাল বুধবার বরগুনা-মঠবাড়িয়া-খুলনা সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), একজন উপপরিদর্শকসহ (এসআই) কমপক্ষে ১২০ জন আহত হন।
কয়েকজন ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, খণ্ডকালীন শিক্ষিকা নিয়োগ দিয়ে তাঁদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক ছাত্রীকে হোস্টেল ত্যাগে বাধ্য করা, টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য ঘুষ দাবি করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে ১ জুন থেকে শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২ জুন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসব অভিযোগের তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেন। ইনস্টিটিউটের পাঁচটি বিভাগের প্রধানদের নিয়ে করা এই কমিটি অভিযোগগুলোর তদন্ত করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরগুনা শহরের উপকণ্ঠে পোটকাখালী এলাকায় অবস্থিত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে বরগুনা-মঠবাড়িয়া-খুলনা সড়কটি অবরোধ করেন। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানায়। এতে অস্বীকৃতি জানান শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। তখন শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন।
খবর পেয়ে বেলা একটার দিকে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সংঘর্ষে ওসি শীলমণি চাকমা, এসআই বশির উদ্দীন ও তিনজন কনস্টেবলসহ কমপক্ষে ১২০ জন আহত হন। বরগুনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পুলক চন্দ্র রায় বলেন, শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে ৩০-৩২টি রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে। আহত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আটজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, পুলিশ বিনা উসকানিতে তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে। পুলিশের ভয়ে আহত শিক্ষার্থীরা চিকিৎসা পর্যন্ত নিতে পারছেন না। শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে গঠন করা কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৫ দিনেও কমিটি প্রতিবেদন দেয়নি। তদন্ত কমিটি ও ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের প্রধান নাসির আহমেদ বলেন, বিষয়টির তদন্তকাজ শেষ করতে আরও সাত দিন সময় নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিপূরক (রেফার্ড) পরীক্ষা চলায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি।