মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের করোনায় আক্রান্ত মাকে সহানুভূতি ও আবেগের জায়গা থেকে দেখতে গেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ কথা বলেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে এ কথা বলেন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদের মা। তাঁর চিকিৎসাসেবার কাজে মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তরের ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল২৪–এর খবরে বলা হয়েছে। তিন দিনে পালা করে তাঁদের এ কাজ করতে বলা হয়েছে। এ খবর প্রচারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। অবশ্য সচিব রওনক মাহমুদ বলেছেন, এটি সঠিক নয়। কেউ হয়তো দেখতে যেতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে আজ শ ম রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সচিব আমাকে বলেছেন যে তাঁর মাকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তিনিও শারীরিকভাবে দুরবস্থায় আছেন। এ অবস্থায় আমাদের মন্ত্রণালয়ের বেশ কিছু কর্মকর্তা তাঁর মাকে সহানুভূতি জানাতে গেছেন। এ ক্ষেত্রে উপচে পড়া ভিড় হওয়ার কারণে তাঁরা নিজেরা পর্যায়ক্রমে হাসপাতালে গেছেন সহানুভূতি জানাতে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি সচিবের কাছে জানতে চেয়েছি যে কোনো কর্মকর্তাকে বাই রোটেশন (পর্যায়ক্রমে) ডিউটি করতে বলা হয়েছে কি না? তিনি বলেছেন, এটা সম্পূর্ণরূপে অসত্য। বাই রোটেশন তো দূরের কথা, অফিশিয়ালি কাউকে কিছু বলা হয়নি।’ মন্ত্রী আরও বলেন, সচিব বলেছেন, কেউ দেখাতে পারে না যে মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। চিঠি ইস্যু করা হলেও কারও না কারও সই থাকে, মেমো নম্বর থাকে, তারিখ থাকে, এগুলো কিছুই করা হয়নি। বোধ হয় ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে সচিব জানান।
বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে কি না, জানতে চাইলে সরাসরি এর কোনো উত্তর দেননি মন্ত্রী।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আজ মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, এমন দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কোনো আদেশ বা নির্দেশনা জারি করা হয়নি। কিন্তু অতি উৎসাহী হয়ে কেউ এভাবে অনানুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য তালিকা করেছেন কি না, সেটি দেখার বিষয়। তাঁর ভাষায়, সাধারণত শীর্ষ পর্যায়ের কেউ অসুস্থ বা বিপদে পড়লে অধীনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেখতে যান। তাঁদের সচিবের মা এখন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল২৪–এর খবরে বলা হয়, ওই সব দায়িত্ব দেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পালা করে ২৩, ২৪ ও ২৫ তারিখে দায়িত্ব পালন করতে অনুরোধ করা হয়। হাসপাতালে যা শুরুও হয়। ২৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায়িত্ব সমন্বয় করছেন সচিবের একান্ত সচিব আজিজুল ইসলাম। এ বিষয়ে আজিজুল ইসলামের মন্তব্য জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি।