উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য শিল্পকারখানায় শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘মালিকদের মনে রাখতে হবে, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা হলে শ্রমিকেরা আনন্দের সঙ্গে কাজ করবে। এতে উৎপাদন ও পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে। বেশি লাভবান হবে মালিকেরাই।’
মহান মে দিবস উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গত রোববার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভার আয়োজন করা হয়।
শ্রমিকেরা যে কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন, সেই কারখানা যাতে টিকে থাকে এবং সেটা যেন ভালোভাবে চলে, সেটার কিছু দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষেরই দায়িত্ব রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকের মূল্যই তাঁর সরকারের কাছে সবচেয়ে বড়। তিনি বলেন, শ্রমিকদের হাতেই দেশের অর্থনীতি সচল থাকে। তাঁদের কারণেই দেশ উন্নত হয়।
তৈরি পোশাকশ্রমিকদের বেতন বাড়াতে সরকারি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বেতন বাড়ানোর জন্য তিনিই ছিলেন শ্রমিক পক্ষের ‘বার্গেনিং এজেন্ট’। তিনি বলেন, ১৯৯৬-পরবর্তী তাঁর সরকারের প্রচেষ্টায় এবং ২০০৯ সালের বিশেষ উদ্যোগের ফলে শ্রমিকদের মজুরি কয়েক দফায় বেড়ে বর্তমানে ৫ হাজার ৩০০ টাকা হয়েছে। এ জন্য মালিকপক্ষের অনেক দাবিও সরকার মিটিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে উন্নত করতে হলে নতুন নতুন শিল্পকারখানা চালু করতে হবে, শ্রমিকদের স্বার্থও দেখতে হবে। শ্রমিকদের মূল্য আওয়ামী লীগের কাছে অনেক বেশি। এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই তাঁর সরকার এগিয়ে চলছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুন্নুজান সুফিয়ান এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রিনিবাস বি রেড্ডি। শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ এবং মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সালাউদ্দিন কাশেম খান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।