>
- অভিযোগপত্রভুক্ত পাঁচ আসামির সবাই কারাগারে
- ২৪ আসামির মধ্যে ১৯ জন বিভিন্ন সময়ে বন্দুকযুদ্ধে নিহত
- ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ওই হামলায় দুই কনস্টেবল ও এক গৃহবধূ নিহত হন
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। আজ বুধবার কিশোরগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহর আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরিফুর রহমান।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগপত্র দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন: জাহিদুল হক ওরফে তানিম (২৪), জেএমবির শীর্ষ নেতা মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান (৬০), মো. আনোয়ার হোসেন (৪৫), মো. আ. সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ (৩৩), জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী (৩২)। আসামিরা বর্তমানে কারাগারে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৩ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। ৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ঘটনার পর শোলাকিয়া ও ঢাকার হোলি আর্টিজান হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে তথ্য পেয়ে সারা দেশে অভিযান চালিয়ে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরও জানান, মামলার মোট আসামি ছিলেন ২৪ জন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তাঁদের অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, হোলি আর্টিজান ও শোলাকিয়া হামলায় একই সূত্রে গাঁথা। শোলাকিয়া মাঠের ইমাম ও মুসল্লিদের হত্যা করাই ছিল এ হামলার মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশের আত্মত্যাগে ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহসী ভূমিকায় বড় ধরনের নাশকতা থেকে জনসাধারণ রক্ষা পায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাজমুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শফিকুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুশামা মো. ইকবাল হায়াত, কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত), মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান প্রমুখ।
২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন জামাত শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে আজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে পুলিশের একটি নিরাপত্তাচৌকিতে অতর্কিতে বোমা ও চাপাতি হামলা চালায় জঙ্গিরা। দুপুর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জঙ্গিদের মধ্যে দফায় দফায় বন্দুকযুদ্ধ চলে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পুলিশের দুই কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম ও অানসারুল হক এবং স্থানীয় গৃহবধূ ঝরণা রাণী ভৌমিক। হামলার সময় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ঘটনাস্থলে নিহত হন আবির রহমান নামের এক জঙ্গি। আহত অবস্থায় আটক করা হয় শফিউল ইসলাম নামে আরেক জঙ্গিকে। পরে শফিউল র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নান্দাইলের ডাংরী এলাকায় মারা যান। ঘটনার তিন দিন পর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়।