চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। সিডিএর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। শুধু চাই জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামকে আধুনিক, উন্নত ও পর্যটন নগরে পরিণত করতে হবে।’
আজ শনিবার দুপুরে সিডিএর সম্মেলনকক্ষে সংস্থাটির বোর্ড সদস্য ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী। দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার চট্টগ্রামে এসে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প, আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।
সভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘কাজের গতি বাড়াতে হবে। গতি বাড়াতে গিয়ে যদি কোনো প্রতিকূলতা থাকে, তাহলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। কিন্তু কোনোভাবেই কোনো অজুহাতে উন্নয়ন প্রকল্প থমকে থাকবে, গতি স্তিমিত হয়ে যাবে আর চট্টগ্রামের মানুষ ভোগান্তির শিকার হবে, এর দায়ভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বা তাঁর কাঁধে যাবে—এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
মন্ত্রণালয়ের ১২টি সংস্থার মধ্যে সিডিএকে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর চেয়ে চট্টগ্রামের জন্য বেশি বরাদ্দ দিয়েছেন। এতে বোঝা যায় চট্টগ্রামের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসা। তাই এটি সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে হতাশ করা যাবে না। মন্ত্রী বোর্ড সদস্যদের সিডিএর কার্যক্রমে সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেন।
সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ প্রসঙ্গে গৃহায়ণমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কাজের পরিসর নির্ধারণ করা আছে। যার যার নির্ধারিত দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করতে হবে। একে অপরের কখনোই শত্রু নয়, পরিপূরক।
জলাবদ্ধতা নিরসনে নাগরিক সচেতনতার ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, খাল পরিষ্কারের পর যদি আবার বর্জ্য ফেলা হয়, তাহলে কোনো সমাধান আসবে না। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত খাল পাহারা দেওয়া তো সম্ভব না।
সভায় সিডিএ বোর্ড সদস্য ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বলেন, অনেক এলাকায় খাল ভরাট হয়ে গেছে। এসব খাল খনন না করলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। মানুষ কষ্ট পাবে।
এই প্রসঙ্গে সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, নগরের ৫৭টি খালের মধ্যে ৩৬টি খালের সংস্কার করা হবে। ইতিমধ্যে ১১টি খালের বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। তাই বর্ষার আগেই ক্র্যাশ প্রোগ্রাম নিয়ে খালগুলোর আবর্জনা পরিষ্কার করা হবে। এতে জলাবদ্ধতা তেমন হবে না।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, সিডিএর বোর্ড সদস্য জসীম উদ্দিন ও স্থপতি আশিক ইমরান। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সিডিএর সচিব তাহেরা ফেরদৌস, প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস প্রমুখ।