শিশুদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতার প্রতিবাদে দেশে একযোগে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে শিশুরা। আজ ৬৪ জেলায় শিশু সংগঠন ন্যাশনাল চিলড্রেনস টাস্কফোর্সের (এনসিটিএফ) উদ্যোগে বিভিন্ন বিদ্যালয় ও শিশু সংগঠনের শিশুদের অংশগ্রহণে মৌন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রতিবাদ কর্মসূচি বেলা সাড়ে ১১টায় সব জেলায় একযোগে শুরু হয়। প্রথমে জেলা শহরের সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে মৌন প্রতিবাদ জানায় শিশুরা। এরপর তারা নিজ নিজ জেলার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়। মৌন প্রতিবাদের সময় প্ল্যাকার্ডে তুলে ধরা হয় শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি।
ঢাকায় মীরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউটর সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এই কর্মসূচি পালনের ফলে সরকার প্রশাসনের মাধ্যমে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছে প্রতিবাদকারী শিশুরা।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে ৬৪ জেলার সব শিশুর পক্ষ থেকে নুসরাতসহ এ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের নিন্দা জানানো হয়। ধর্ষণের শিকার হয়ে বেঁচে যাওয়া শিশুদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের মিডিয়া মনিটরিংয়ের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি ২০১৮ থেকে ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর বিশ্লেষণে দেখা যায়, কমপক্ষে ৫২৭ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২০১৯ সালে মার্চ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪৫ শিশু ধর্ষণ এবং ৪১৪ শিশু বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ হার আরও বেড়েছে। শিশু ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতনের অন্যতম কারণ হিসেবে বলা যায়, নির্যাতনকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাব।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, প্ল্যান বাংলাদেশ ও সেভ দ্য চিলড্রেনের সহায়তায় ২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশে শিশু অধিকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে আসছে এনসিটিএফ। এটি শিশুদের পরিচালিত একটি সংগঠন। এনসিটিএফে শিশুরাই শিশু অধিকার নিয়ে কথা বলে থাকে। জেলা পর্যায়ে শিশুদের নানা সমস্যার সমাধানে সরকারের কাছে পক্ষ সমর্থন করে আবেদন জানায়। এ ছাড়া এনসিটিএফ সদস্যরা জাতীয় পর্যায়ে ‘চাইল্ড পার্লামেন্ট’ অধিবেশনের মাধ্যমে নীতি নির্ধারণী ক্ষেত্রেও অ্যাডভোকেসি করে থাকে।