বৈশ্বিক শিশু অধিকার সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। এবার এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৮তম। গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১৩তম।
সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের বৈশ্বিক শিশু অধিকার সূচক বা কিডসরাইটস ইনডেক্স ২০১৯। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক কিডসরাইটস ফাউন্ডেশন প্রতিবছর এই সূচক প্রকাশ করে থাকে। সহযোগী হিসেবে রয়েছে নেদারল্যান্ডসের এরাসমুস ইউনিভার্সিটি রটারডামের দুটি প্রতিষ্ঠান—এরাসমুস স্কুল অব ইকোনমিকস ও ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল স্টাডিজ। ইউনিসেফ, ইউএনডিপি ও ইউএন কমিটি অন দ্য রাইটস অব দ্য চাইল্ডের তথ্য থেকে এই সূচক তৈরি করা হয়। শিশু অধিকার বিষয়ে বৈশ্বিক জনমত তৈরিতে এই সূচককে গ্রহণযোগ্য মনে করে জাতিসংঘ।
চলতি বছর শিশু অধিকারের এই বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের সামগ্রিক পয়েন্ট ০.৬৭০। গত বছর এই সূচকে বাংলাদেশের সামগ্রিক পয়েন্ট ছিল ০.৬৫৮। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে শিশু অধিকার সূচকে উন্নতি ঘটেছে বাংলাদেশের। সূচকে সব মানদণ্ডে ভালো করার স্বীকৃতি হিসেবে তালিকার সবুজ ঘরে ঠাঁই হয়েছে বাংলাদেশের নাম। গতবার বাংলাদেশ হলুদ ঘরে ছিল।
বিশ্বের কোন দেশ শিশু অধিকার রক্ষায় কেমন অবস্থানে রয়েছে, তা বোঝাতে প্রতিবছর কিডসরাইটস ইনডেক্স প্রকাশ করা হয়। জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত সব দেশ, যারা জাতিসংঘ শিশু অধিকার কনভেনশন (১৯৮৯) তাদের পার্লামেন্টে অনুমোদন করেছে, সেই ১৮১টি দেশের র্যাঙ্কিং এই সূচকে প্রকাশ করা হয়। সেই সঙ্গে বেগুনি (ভালো), সবুজ (সন্তোষজনক), হলুদ (শঙ্কাজনক), কমলা (খারাপ) ও লাল (খুব খারাপ)—তালিকায় এই পাঁচ রং দিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের পরিস্থিতি বোঝানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র এই কনভেনশন অনুমোদন করেনি।
মোট পাঁচটি মাপকাঠির ভিত্তিতে এই সূচক তৈরি করা হয়। এই মাপকাঠিগুলো হলো—শিশুদের জীবনের অধিকার, স্বাস্থ্য অধিকার, শিক্ষার অধিকার, সুরক্ষার অধিকার ও শিশু অধিকার রক্ষার পরিবেশ কেমন। প্রতিটি মাপকাঠিতে দেশগুলোর আলাদা আলাদা র্যাঙ্কিংও প্রকাশ করা হয় সূচকে।
এবারের সূচকে সামগ্রিক মানদণ্ডে শীর্ষে রয়েছে আইসল্যান্ড (০.৯৬৭)। এরপরই রয়েছে পর্তুগাল (০.৯৪৮), সুইজারল্যান্ড (০.৯৩৭) ও ফিনল্যান্ড (০.৯১২)। তালিকার একেবারে তলানিতে রয়েছে আফগানিস্তান (০.১৯৭)।
এবার পৃথকভাবে জীবনের অধিকারের মাপকাঠিতে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৪ (০.৭৬), স্বাস্থ্য অধিকারে অবস্থান ১৩৭ (০.৫২), শিক্ষার অধিকারে অবস্থান ১২১ (০.৬৩০), সুরক্ষার অধিকারে অবস্থান ১২৫ (০.৫৯০) এবং শিশু অধিকার পরিবেশে অবস্থান ২০-৩০ (০.৭৯০)।
উন্নত দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যের অবস্থান বাংলাদেশেরও নিচে (১৭০তম)। নিউজিল্যান্ডের অবস্থান ১৬৯তম।
সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভুটান ৯৪তম (০.৭২০), মালদ্বীপ ১১৬তম (০.৬৪৫), ভারত ১১৭তম (০.৬৪১), নেপাল ১৩৬তম (০.৫৬৬), শ্রীলঙ্কা ১৪৩তম (০.৫৩৪) এবং পাকিস্তানের অবস্থান ১৫১তম (০.৫০১)।