শিশুর বিকাশে পুষ্টি যতটা গুরুত্বপূর্ণ ঘুম ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের ঘুমের ঘাটতি হলে তাদের মনোযোগ কমে যায়। ছোটবেলায় এই ঘুমের ঘাটতি প্রাপ্তবয়স্ক হলে বিরূপ শারীরিক প্রভাব পড়ে। ঘুমের সমস্যাকে অনেকে অসুস্থতা বলে মনে করেন না। এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ঘুম নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এসব কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব সার্জনস ফর স্লিপ অ্যাপনিয়া, বাংলাদেশ (এএসএসএবি)।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ঘুমের সমস্যায় অনেক মানুষ ভোগেন। কিন্তু অনেকে এটা জানেন না যে এটি একধরনের অসুস্থতা। এর জন্য চিকিৎসা দরকার। এ জন্য মানুষকে ঘুমের ব্যাপারে সচেতন করা দরকার।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এবং নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে ঘুম ও পুষ্টি শিশুর জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কোন বয়সে কত সময় ঘুমানোর প্রয়োজন, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণা হয়েছে। বাংলাদেশেও গবেষণা হওয়ার দরকার।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন শুরু হয়েছে গতকাল রোববার। প্রথম দিন ঘুমের চিকিৎসা, বিশেষ করে শল্যচিকিৎসা নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। আজ ছিল সম্মেলনের শেষ দিন। সম্মেলনে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ছাড়াও হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞরা যোগ দিয়েছেন। অনলাইনে ভারত ও সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরাও বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজন সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক মনিলাল আইচ বলেন, ‘ঘুমের প্রতি আমরা বিমাতাসুলভ আচরণ করি। আমরা ভালো থাকার জন্য খাদ্য ও শরীরচর্চা নিয়ে অনেক কথা বলি। কিন্তু ঘুম নিয়ে কথা বলি না।’
আলোচনায় একাধিক চিকিৎসক শিশুদের ঘুমের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা বলেন, সকালের স্কুল শিশুর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। পর্যাপ্ত না ঘুমালে শিশুরা স্কুলে যাওয়ার পথে রিকশায় বা গাড়িতে ঝিমাতে থাকে। স্কুলে যাওয়ার পর ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারে না। অনেক শিশু ক্লাসে ঘুমিয়ে পড়ে। তারা ফলাফল খারাপ করে। ছোটবেলায় পর্যাপ্ত ভালো ঘুম না হওয়ার বিরূপ শারীরিক প্রভাব পড়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে। একজন আলোচক শিক্ষামন্ত্রীর কাছে শিশুদের স্কুলের সময় পরিবর্তনের অনুরোধ জানান।